কৃষ্ণকুমার দাস: ছটপুজোর (Chhat puja) মাত্র একদিন আগে, জরুরি ভিত্তিতে শীর্ষ আদালতে শুনানি করেও কোনও সুরাহা মিলল না। জাতীয় সরোবরের তকমা পাওয়া রবীন্দ্র সরোবরে কোনওভাবেই ছটপুজোর অনুমতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্ট ও জাতীয় পরিবেশ আদালতের (NGT) রায়ে কোনও স্থগিতাদেশ বা সংশোধনের পথে হাঁটল না সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। ফলে শুক্রবার রবীন্দ্র সরোবর বা সুভাষ সরোবরে ছটপুজো হবে না এবছর।
গত বছরের মতো জাতীয় পরিবেশ আদালত এবছরও রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিধিনিষেধ মেনে কেএমডিএ ছটপুজোর আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু আবেদন খারিজ হয় সেখানেও। এরপর এই দুই আদালতের রায়ের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে কেএমডিএ। যে বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ১৬ তারিখ, সেখানে শুনানি না হয়ে অন্য বেঞ্চে শুনানিতে সরোবরে ছটপুজোর কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছিল ২৩ তারিখ। কিন্তু ২০ তারিখ ছটপুজো। তাই ২৩ তারিখ শুনানি হলে, কোনও লাভ হবে না। এই যুক্তিতে কেএমডিএ জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করে। সেইমতো বৃহস্পতিবার তিন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হয়। কিন্তু একই রায় বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। হাই কোর্ট এবং জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ে কোনও সংশোধন হবে না বলে জানিয়ে দেন তিন বিচারপতি।
এই রায় শুনে কেএমডিএ’র চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরাহাদ হাকিম জানান, ”মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে এবছর আমরা বিধিনিষেধ মেনেই রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজোর অনুমতি চেয়েছিলাম। তা খারিজ হয়েছে। শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে শহজুড়ে বিকল্প প্রচুর কৃত্রিম জলাশয় ও ঘাট তৈরি করা হয়েছে। সকলের কাছে আবেদন, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে বাড়ির কাছের জলাশয় বা ঘাটে ছটপুজো করুন।”
আদালতের অনুমোদন নাও মিলতে পারে, একথা মাথায় রেখে ছটপুজোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। শহরের ১৬ টি জলাশয়ে ৪৪টি কৃত্রিম ঘাট তৈরি করেছে কেএমডিএ। অন্যদিকে, পুরসভাও ৪৮ টা কৃত্রিম ঘাট এবং ত্রিধারা মডেলে কৃত্রিম পুকুর তৈরি করেছে। এছাড়া গঙ্গার তীরে আরও ৪০ টি অস্থায়ী ঘাট তৈরি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেও, পুজোর দিন তা কতটা বাস্তবায়িত করা যাবে, তা নিয়ে সংশয়ী পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশবিদ তথা রবীন্দ্র সরোবর লেকের মর্নিং ওয়াকার্স গিল্ডের কনভেনার সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ জানাচ্ছেন, ”এখন আমাদের একটাই চিন্তা। শুক্রবার পুলিশ শীর্ষ আদালতের রায় যথাযথভাবে পালনে কতটা সক্ষম হবে। কারণ, গত বছর পুলিশের উপস্থিতিতেই তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে ছটপুজো করা হয়েছিল। তাই রাজ্যের কাছে আবেদন, পুলিশের সংখ্যা আরও বাড়ান, পরিবেশ বাঁচান।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.