কৃষ্ণকুমার দাস: অবশেষে আগামী ১৫ আগস্টের পরই কালীঘাট মন্দিরের (Kalighat Temple) প্রবেশ পথে স্কাই-ওয়াক নির্মানের কাজ শুরু করছে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। তার আগে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে মন্দিরে প্রবেশের মুখে হকার্স কর্নারের ১৭৪ জন দোকানি হাজরা পার্কের অস্থায়ী মার্কেটে সরে যাবে। শনিবার এই দোকানিদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর হাজরা পার্কে দাঁড়িয়ে একথা ঘোষণা করেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
তাঁর কথায়, “হকারদের কমিটিই লটারি করে দেওয়ার পর ইতিমধ্যে ১৫৪ জন দোকানি অস্থায়ী মার্কেটে স্টলের পজিশন নিয়েছেন। বাকি ২০ জনও শীঘ্রই পজিশন নেবেন বলে আশা রাখছি। দোকান স্থানান্তরের জন্য হকারদের স্টল পিছু ১০ হাজার টাকা দেবে পুরসভা।” হকাররা ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সরে গেলে পনেরো দিন পরেই স্কাইওয়াক নির্মানের কাজ শুরু করা হবে বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যপ্রশাসক। হকাররা অবশ্য দাবি করেছিল, এবার পুজোর সময়টুকু পুরনো মার্কেটে বসতে দেওয়া হোক। কিন্তু মুখ্যপ্রশাসক জানান, আগামী বছর পুজোর আগে যাতে স্কাইওয়াকের ওই অংশের কাজ শেষ করে শপিংমল স্টাইলে হকার্স কর্নার করে দিতে পারি সেজন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। হাজরা পার্কের অস্থায়ী মার্কেট নিয়ে পুরসভাই দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে প্রচার করবে বলে জানান মন্ত্রী।
দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকের আদলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের নির্দেশে এবার কালীঘাটেও একই ডিজাইনের ‘আকাশপথ’ তৈরি হচ্ছে। প্রায় ৩৫০ মিটার দীর্ঘ ওই স্কাইওয়াকের প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। রাইটস এই প্রকল্পের নকশা ও অন্যান্য কাজ সম্পূর্ণ করে জমা দেওয়ার পর এবার স্কাইওয়াক নির্মান শুরুর অপেক্ষা। কালীঘাট মন্দির লাগোয়া দোকানিদের সরিয়ে পার্শ্ববর্তী চাতালেই ঠিকানা করে দেওয়া হয়েছে। এবার প্রবেশপথের হকার্স কর্নার ও ফুটপাতের হকারই পুরসভা ও প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ। হকার্স কর্নারের দোকানিদের হাজরা পার্কে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করে দিলেও গুটিকয় হকারের অসন্তোষ ঘিরে আটকে গিয়েছে স্থানান্তর।
বিষয়টি নিয়ে এদিন হাজরা পার্কেই দোকানিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মন্ত্রী ফিরহাদ ছাড়াও বিধায়ক দেবাশিস কুমার, দুই প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য রতন দে এবং বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা কুমার সাহা, গনেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনার সময়, দু’একজন দোকানি হকার্স কমিটি পরিবর্তনের পাশাপাশি লটারিতে নিজেদের নামে উঠে আসা স্টলের পজিশন নিয়ে আপত্তি জানান। সিদ্ধান্ত হয়, দু’তিনদিনের মধ্যে স্টলে আলো ও বিদ্যুতের সংযোগের ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করবে পুরসভা। তারপরই স্থানান্তর শুরু হবে। মুখ্যপ্রশাসক বলেন, “লটারিতে পাওয়া স্টলে সবাই খুশি হয় না। যাঁরা পিছন সারির স্টলে পড়েছেন তাঁদের সামান্য অসন্তোষ রয়েছে, কিন্তু সব ঠিক হয়ে যাবে।” তবে দোকানিদের মধ্যে যে ২০ জন ‘অসন্তুষ্ট’ রয়েছেন তাঁদের দাবি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দেন পরিবহণমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.