প্রতীকী ছবি।
অভিরূপ দাস: সবুজ মাঠ। জায়গায় জায়গায় আবর্জনার স্তুপ। জেসিবি দিয়ে মাটির খুড়তেই বেরিয়ে এল জল! সোনা-দানা নয়। দক্ষিণ শহরতলির নেতাজিনগর এলাকায় চুরি হয়ে গিয়েছিল আস্ত একটা পুকুর। প্রেমিসেস নম্বর ২২/১এ জোড়াবাগান রোড। অথচ এখন তা মাঠ। বুধবার সেই পুকুরই উদ্ধার করতে নামল কলকাতা পুরসভা।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাম আমল থেকেই এই পুকুর বোজানোর শুরু হয়। এলাকার বাসিন্দা সুবীর ধরের কথায়, “ষাট বছর ধরে এলাকায় বসবাস করছি। ১৯৮০ সালের পর থেকে দেখছি একটু একটু করে পুকুরটা বুজে যাচ্ছে।” পেল্লায় জলাশয়টা বুজতে বুজতে এখন মাঠে পরিণত হয়েছে।
কেন বুজল জলাশয়? বাসিন্দাদের বক্তব্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অঞ্চলে জমির দাম বেড়েছে। অসাধু চক্র বুজিয়ে দিচ্ছে পুকুর। খবর পাওয়া মাত্রই বুধবার বোজানো পুকুরে জেসিবি নামানোর নির্দেশ দেন মেয়র, উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার পরিবেশ বিভাগের কর্মীরা। পুরসভা সূত্রে খবর, আপাতত টানা কাজ চলবে নেতাজিনগরে। যতক্ষণ না টলটলে জল বেরিয়ে আসছে, পুরসভা কাজ চালিয়ে যাবে। শুধু নেতাজিনগর নয়, শহরের একাধিক বোজানো পুকুর উদ্ধার করতে নামছে পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কাশিপুরে একাধিক পুকুর বুজিয়ে গাড়ির গ্যারেজ তৈরি হয়েছে। সেই গুলোকে সাধারণ মানুষের কাছে আবার জলাশয় হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
নেতাজি নগরে যেখানে ওই পুকুর, সম্প্রতি আগুন লেগেছিল তার পাশেই। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগুন নেভানোর জল আনতে নাকানি চোবানি খেতে হয়। পুকুরটায় জল থাকলে সে অবস্থা হত না। এলাকার বাসিন্দা অরূপ ভৌমিক জানিয়েছেন, এই পুকুরের পাশে আরও একটি পুকুর ছিল। তাও ভরে গিয়েছে বাম আমলে। কলকাতা পুরসভা কাজ শুরু করায় আশার আলো দেখছেন এলাকাবাসীরা।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাস্তা একটু খারাপ থাকলেও অসুবিধা নেই। কিন্তু জলাশয় বোজানো কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। যারা জলাশয় বোজাচ্ছেন তারা মানবসম্পদ চুরি করছেন। এই অন্যায়ের মাফ নেই।” ইতিমধ্যেই শহরজুড়ে পুকুরের তালিকা বার করেছে কলকাতা পুরসভার পরিবেশ বিভাগ। দেখা গিয়েছে আট হাজারের উপর পুকুর রয়েছে শহর কলকাতায়। মেয়রের আপেক্ষ, সিএসআর ফান্ড দিয়ে জলাশয় রক্ষা করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার জলাশয় সংরক্ষণের জন্য কোনও আর্থিক সাহায্য করে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.