অভিরূপ দাস: বারবার বলা সত্ত্বেও ছাড়েননি বিপজ্জনক বাড়ি। বুধবার রাতে বাড়ি ভেঙেই মৃত্যু হয়েছে ইলা আগরওয়ালের। গুরুতর আহত স্বামী অজয় আগরওয়াল। শুক্রবার তাঁদের ছেলে আর্দশ আগরওয়ালের হাতে ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ তুলে দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। মাতৃহীন আদর্শকে আর ছাড়তে হবে না ভাড়াবাড়ি।
এই সার্টিফিকেট থাকলে নতুন বাড়ি হওয়ার পরেও ভাড়াটেরা জায়গা পাবেন। মালিক তাড়াতে পারবেন না। এমনই নতুন আইন এনেছে কলকাতা পুরসভা। যা ভাড়াটের স্বার্থরক্ষা করবে। নতুন আইন অনুযায়ী, এই শংসাপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাসেসমেন্ট বুকে ভাড়াটেদের নাম রেকর্ড হয়ে যাবে। নতুন বিল্ডিং প্ল্যান হলে ওই ভাড়াটেদের কোথায় জায়গা দেওয়া হবে তার উল্লেখ থাকবে। ভাড়াটেদের জায়গা না দেওয়া হলে বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনই পাবে না।
নিজের বাড়িতে জায়গা দিতে হবে ভাড়াটেদের! আদৌ মালিকরা মানবেন তা? মেয়র জানিয়েছেন, ভাড়াটেদের জায়গা দিলেও বাড়ির মালিকের কোনও লোকসান হবে না। কারণ রুল ১৪২ অনুযায়ী যা এফএআর পাওয়া উচিত, তার চেয়ে অতিরিক্ত ফ্লোর এরিয়া রেশিও বা এফএআর পাবেন বাড়ির মালিক। অর্থাৎ যতটা জমি ছাড়তে হয় তার চেয়ে কম জমি ছাড়তে হবে বাড়ির মালিককে। অতিরিক্ত যে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (FAR) পাবেন তার থেকেই ভাড়াটেদের দেবেন মালিক। এদিকে এই অতিরিক্ত এফএআর দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে রাজ্যের দমকল দপ্তর। তাদের যুক্তি, বাড়ি যদি কম জায়গা ছাড়ে তাহলে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারবে না। নোটিস দেওয়ার পরেও বাড়ি খালি করেন না ভাড়াটেরা। পাছে ছাদ হারিয়ে যায়। কলকাতার একাধিক বিপজ্জনক বাড়ির এ এক পুরনো অসুখ। প্রাণ হাতে করেই থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
শুক্রবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “দমকল দপ্তরের কাছে আমার অনুরোধ, পুরনো বাড়ির ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিন।” তবে পাথুরিয়াঘাটায় এফএআর নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলেই জানিয়েছেন মেয়র। তাঁর বক্তব্য, এখানে অনেকটা জায়গা রয়েছে। সূত্রের খবর মেয়রের অনুরোধ বিবেচনা করে শীঘ্রই এ বিষয়ে নতুন আইন আনতে চলেছে দমকল দপ্তর। এদিন পাথুরিয়াঘাটার ১১ টি পরিবারের হাতে এই অকুপেন্সি সার্টিফিকেট তুলে দিল কলকাতা পুরসভা। যতদিন না বাড়ি হচ্ছে ততদিন ভাড়াটেদের জন্য খালি মাঠে টিনের চাল দিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মেয়র জানিয়েছেন, ওই বাড়িটার যা অবস্থা কিছুদিনের মধ্যেই পুরো বাড়িটা ভেঙে পড়বে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.