অনির্বাণ বিশ্বাস: মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানে দু-দুটো কালবৈশাখী। তছনছ কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ। প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। ভেঙে পড়েছে অজস্র বাড়ি ও গাছ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শহরকে ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে চলেছেন কলকাতা পুরসভার কর্মীরা। পরিবারের সদস্যদের হাতে চেক তুলে দিলেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ঝড়ে যেসব বাড়ি ভেঙে পড়েছে, সেই বাড়িগুলিও মেরামত করে দেবে কলকাতা পুরসভা।
[কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড রাজ্য, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪]
গত কয়েক দিন ধরে তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল রাজ্যবাসীর। সকলেই চাইছিলেন, একটু ঝড়-বৃষ্টি হোক। সত্যি কথা বলতে, চৈত্র-বৈশাখ মাসে সন্ধ্যাবেলায় ঝড়-বৃষ্টি তো হয়েই থাকে। সান্ধ্যকালীন এই দুর্যোগ কালবৈশাখী নামে পরিচিত। কিন্তু, সেই কালবৈশাখী যে এত ভয়ঙ্কর রূপ নেবে, তা আঁচ করতে পারেননি কেউ-ই। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটা নয়, বরং পরপর দুটি কালবৈশাখী আছড়ে পড়েছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। দুটি ঝড়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল বড়জোর মিনিট দশেক। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৮ কিমি। হাওয়া অফিসের তথ্য, গত ৭২ বছরে এমন জোরাল কালবৈশাখী হয়নি মহানগরে। ঝড়ের দাপটে কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে তিলোত্তমা। হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, দুই চব্বিশ পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বাকি জেলাগুলি অবস্থাও তথৈবচ। ঝড়ে অজস্ত্র বাড়ি ও গাছ তো ভেঙেছেই, বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল ট্রেন, ট্রাম, এমনকী, মেট্রো পরিষেবাও। শুধুমাত্র কলকাতায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। গোটা দক্ষিণবঙ্গের হিসেব ধরলে ঝড়ে মৃতের সংখ্যা ১৬। শহরকে আগের অবস্থায় ফেরানোর জন্য যেমন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে, তেমনি ঝড়ে মৃতদের পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছে পুর প্রশাসন। বুধবার ঝড়ে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান দিল কলকাতা পুরসভা। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে। শহরের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিও নিঃখরচায় সারিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র। জেলায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও ক্ষতিপূরণ পাবেন।
[বৈশাখের দহনেও বরফে ঢাকল সিকিম]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.