স্টাফ রিপোর্টার: মহানগরের সরকারি অফিস, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, আদালত এবং হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের ১০০ মিটারের মধ্যে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কলকাতা পুরসভা। পুরভবন থেকে শুরু করে সরকারি অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে বর্তমানে যে সমস্ত তামাকজাত পণ্য বিক্রির দোকান রয়েছে সেগুলি থেকে বিড়ি-সিগারেট-গুটখা সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তামাকবর্জন দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শুক্রবার ‘কটপা-২০০৩’ আইন কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
আইন বলবৎ করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে নজরদারির জন্য শহরের সমস্ত থানাকে সক্রিয় হতে শহরের পুলিশ কমিশনারকেও নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। দেখতে বলেছেন, “১৮ বছরের কম বয়সিরা যেন তামাকজাত পণ্য ক্রয় বা বিক্রয়ের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত না থাকে।” উল্লেখ্য ১৫ বছর আগে একবার এই আইন মেনে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি নিয়ে নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ফের খোদ পুরভবন বা হাসপাতাল চত্বরে চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নয়া মেয়র শহরে ক্যানসার আক্রান্তের হার কমাতে পুরনো আইন লাগু করতে চাইছেন কলকাতায়।
[ আরও পড়ুন: নারদ কাণ্ডে ফের সক্রিয় ইডি, তলব রত্না চট্টোপাধ্যায়-শ্রেয়া পাণ্ডেকে ]
‘একটা সিগারেট খাওয়া মানে মৃত্যুর জন্য ঝাঁপ দেওয়া, আত্মহত্যার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।’ কলকাতার মৌলালি যুবকেন্দ্রে তামাকবর্জন দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে এভাবেই বক্তব্য শুরু করেন মেয়র। বলেন, “আইন করে সাধারণ মানুষের সিগারেট-বিড়ি খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। যেভাবে জল নষ্ট করবেন না, জঞ্জাল ফেলবেন না, গাছ কাটবেন না বলে গণ-আন্দোলন হয়েছে সেভাবেই তামাকজাত পণ্য ব্যবহারও বন্ধ করতে হবে। মানুষকে আরও বেশিদিন বাঁচতে হবে বলেই সচেতন কর্মসূচিকে গণ-আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। পরিবারের স্বার্থে সবাইকে আরও বেশিদিন বাঁচতে হলে বিড়ি-সিগারেট ছাড়তেই হবে। প্রতিটি মানুষকে অন্য একজন ব্যক্তিকে বিড়ি-সিগারেটের নেশা ছাড়াতে হবে।”
মৌলালি যুব কেন্দ্রে ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন ও নারায়ণ হৃদালয় হাসপাতালের যৌথ আয়োজনের সভায় বক্তব্য রাখছিলেন মেয়র। সেখানেই মেয়র বলেন, “তামাকজাত পণ্য আইন (COTPA-2003) মেনে পুলিশকে শহরজুড়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিচ্ছি। সরকারি বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধের পাশাপাশি শহরের সমস্ত পুরস্কুলে শিশুদের দাঁতপরীক্ষায় বিশেষ কর্মসূচি চালুরও ঘোষণা করেন মেয়র। কলকাতার ২৬ হাজার স্কুল পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের কাছেও রাজ্য ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের ডাক্তাররা আগামী দু’মাসে পৌছবেন।
মেয়রের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন শিল্পী অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, চিত্রপরিচালক শিবপ্রসাদ রায়, ডাঃ জনক রাজ সবরওয়াল ও আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ তপন গিরি, ডাঃ রাজু বিশ্বাস প্রমুখ।
[ আরও পড়ুন: যাদবপুর চত্বরে বাড়ছে জন্ডিস আক্রান্তের সংখ্যা, মোকাবিলায় প্রস্তুত পুরসভা ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.