কৃষ্ণকুমার দাস: অবশেষে ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পেল বেলুড় মঠ। তবে, আসল নয়। সেই ডেথ সার্টিফিকেটের প্রত্যয়িত প্রতিলিপি। ডিজিটাল ফরম্যাটের এই ডেথ সার্টিফিকেটটি বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। আসলে যে সময় রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ইহলোক ত্যাগ করেন, সেসময় শ্মশানে পুরসভার তরফে মৃত্যুর নথিভুক্তকরণ করা হত না। ব্রিটিশরা আইন করে সমস্ত শেষকৃত্যের তথ্য থানায় নথিভুক্ত করিয়ে রাখত।পরমহংসদেবের ক্ষেত্রেও তেমনটা করা হয়েছিল। কিন্তু, ঠাকুর রামকৃষ্ণের সেই নথি এখন সরকারি সম্পত্তি। আইন অনুযায়ী তা বেলুড় মঠের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই, একটি ডিজিটাল প্রতিলিপি তৈরি করে তা তুলে দেওয়া হল মঠের হাতে।
বেলুড় মঠ কতৃর্পক্ষ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে নিয়ে একটি আর্কাইভ তৈরি করছে। তাই কলকাতা পুরসভার কাছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ঠাকুরের ডেথ সার্টিফিকেট নথি চেয়ে দরবার করছিল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। কিন্তু সরকারি নিয়মে এই নথি দেওয়ায় আইনত বাধা রয়েছে। ডেপুটি মেয়রের ব্যাখ্যা, “কাশীপুর থানা থেকে সংগ্রহ করা মূল রেজিস্ট্রেশন খাতা যেহেতু সরকারি সম্পত্তি তাই এটি দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ওই খাতার ডিজিটাল রেপ্লিকা তৈরি করে হুবহু বেলুড়ে মঠ ও মিশনকে তুলে দেওয়া হচ্ছে।” বেলুড় মঠের হাতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের মৃত্যুর তথ্য সম্বলিত ডিজিটাল রেপ্লিকা তুলে দিতে পেরে কলকাতা পুরসভার তরফে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ডেপুটি মেয়র।
১৮৮৬ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে পরমপুরুষ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মাত্র ৫২ বছর বয়সে কাশীপুর উদ্যানবাটিতে মারা যান। শেষকৃত্য হয় কাশীপুর শ্মশানেই। শবদাহের আগে কাশীপুর থানায় মৃত্যুর খবর নথিভুক্ত করান অনুগামীরা। সেখানে লেখা হয় ঠাকুরের আসল নাম, গদাধর চট্টোপাধ্যায়। পেশায় পুরোহিত। সেই নথিতে নাকি তাঁর নাম লেখা হয়েছিল রাম কিষ্টো প্রমোহংশ। তবে, এই নথি জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই একটি নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হল। সেটি হল, ঠাকুর রামকৃষ্ণের মৃত্যুর আসল কারণ কী? জনশ্রুতি অনুযায়ী ঠাকুরের মৃত্যু হয়েছিল গলার ক্যানসারে। কিন্তু, পুরসভা যে নথি তুলে দিচ্ছে, তাতে ঠাকুরের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে আলসার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.