রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কেউ ঘরবন্দি। কেউ বা মুষড়ে পড়েছেন। গেরুয়া শিবিরের ১৩৯ পরাজিত প্রার্থীই হতাশ কলকাতা পুরভোটে (Kolkata Municipal Elections) দলের এই বিপর্যয়ে। বহু ওয়ার্ডেই প্রচারের সময় লোকবল ছিল না। কর্মীদের পাওয়া যায়নি। দলের সংগঠনের হালও এতটাই তলানিতে ছিল যে যুদ্ধের ময়দানে শাসকদলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া যায়নি।
২০১০ সালে যখন বঙ্গে বিজেপির (BJP) কোনও সংগঠনই ছিল না, বড় বাজারের পার্টি বলে পরিচিত ছিল তারা, সেই সময় তিনটি ওয়ার্ড দখল করেছিল বিজেপি। ২০১৫ সালে যখন রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি সবে প্রাসঙ্গিকতা পাচ্ছে তখনও কলকাতা পুরসভায় গোটা সাতেক আসন জিতেছিল গেরুয়া শিবির। এরপর ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে গেরুয়া শিবির হঠাতই ফুলে ফেঁপে ওঠে। ২০১৯ লোকসভার নিরিখে হিসাব করলে কলকাতার ২২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সেই সাফল্যের পর কলকাতায় সংগঠন বাড়ানোর স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায় বিজেপি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেই গেরুয়া শিবিরের সেই স্বপ্ন ধাক্কা খায়। সেবারে আসন অনেকটাই কমে। ২০২১ পুরনির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের যাবতীয় স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। এই বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে দলের অন্দরেই অনেকে দায়ী করছেন প্রার্থী নির্বাচন এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে।
দলের সাংগঠনিক শক্তি যদি কলকাতায় মজবুত হত, দলের মধ্যে আদি-নব্য দ্বন্দ্বের প্রভাব যদি পুরভোটে না পড়ত, তাহলে হয়তো ফল আরেকটু ভাল হতে পারত বলে মনে করছেন বিজেপির পরাজিত অনেক প্রার্থীই। প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও কর্মীবল ও সংগঠন ছাড়া লড়াই করলে যা হয় সেটাই হয়েছে বলে দলের অন্দরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, দলীয় সূত্রে খবর।
প্রচারে সেভাবে লোক পাচ্ছেন না বলে আগেই হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মুকেশ সিং। ভোটের দিনও দলের রাজ্য দফতরেই অনেকটা সময় ছিলেন মুকেশ। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী দেবাশিস শীলও হতাশ। প্রচারে সেভাবে কর্মীদের পাশে পাননি। দলের একাংশের কথায়, কলকাতায় সংগঠন দুর্বল। নিচুতলার সঙ্গে আলোচনায় প্রার্থী করা হলে এত খারাপ ফল হত না। তিনবার দখলে থাকা ৪২ নম্বরের কাউন্সিলর সুনীতা ঝাওয়ারের পরাজয় দলের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজ্য নেতাদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.