সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সবুজ ঝড়ে ফিকে সব রং। কলকাতার বুকে আবারও ঘাসফুলের দাপট। কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Election) ১৪৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৪ টিতেই গড়িয়েছে তৃণমূল (TMC) প্রার্থীদের বিজয়রথ। বাকি ১০ সাকুল্যে বিরোধীদের। তার মধ্যেও আবার ৩টি ওয়ার্ডে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা। এই তিন নির্দল প্রার্থী যোগ দেবেন শাসকদল তৃণমূলে। জয়ের পর নিজেরাই জানিয়েছেন তাঁরা। ফলে অঙ্কের হিসেবে তৃণমূলের (TMC) দখলে মোট ১৩৭টি আসন। সিপিএম, কংগ্রেস – উভয়েরই প্রাপ্তি ২ টি করে আসন। তুলনায় এদের চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে বিজেপি – ৩টি। তবে ১৩৭ টি আসনের তুলনায় এই সংখ্যাতত্ত্ব নিতান্তই তুচ্ছ। আর এখানেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্লেষ – ‘বিজেপি ভোকাট্টা, সিপিএম নো পাত্তা, কংগ্রেস স্যান্ডুইচ’।
সত্যিই তাই। ২০১৫ সালে কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের দখলে ছিল ১১০টির বেশি আসন। ১৫টি আসন পেয়েছিল সিপিএম (CPM), বিজেপির (BJP) আসন ছিল ৯ টি। এই সংখ্যাতত্ত্বের তুলনা করলে ২০২১ সালের পুরভোটে তৃণমূলের জয়ের ব্যপ্তি বেড়েছে অনেকটাই। উলটোদিক থেকে বিরোধীদের ঝুলিতে রয়েছে যৎকিঞ্চিৎ। এ নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূল সুপ্রিমোকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ”বিজেপি ভোকাট্টা। মানুষের সমর্থন পেতে ব্যর্থ। বাকিদেরও একই অবস্থা। সিপিএম নো পাত্তা। আর কংগ্রেস সিপিএম ও বিজেপির মাঝে পড়ে স্যান্ডুইচ।”
এমনিতেও পুরভোটের প্রচারে গেরুয়া শিবিরকে সেভাবে দেখা যায়নি। বরং সরকার বিরোধিতায় অন্যান্য জায়গায় তাঁরা ছিলেন বেশি সক্রিয়। সেই আন্দোলনের জায়গা থেকেই হয়ত ৩ টি ওয়ার্ডে জয়পতাকা উড়েছে গেরুয়া শিবিরের। সিপিএম প্রার্থীরা পাড়ায় পাড়ায় প্রচার করেছেন ঠিকই। তবে জনমানসে যে তেমন দাগ কাটতে পারেননি, তা স্পষ্ট পুরভোটের ফলাফলে। মাত্র ২ জন জিতেছেন। আর কংগ্রেস যেখানে জিতেছে, সেই ৪৫ নং ওয়ার্ডের সন্তোষ পাঠক দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ কাউন্সিলর। তাঁর নিজস্ব ভোটব্যাংকে ভরসা করেই জয়লাভ করেছেন।
চলতি বছরই আরেক নির্বাচনের সাক্ষী ছিল রাজ্য। একুশের বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election)। সেখানে বিজেপি বাদ দিয়ে বাকি বিরোধীরা ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। বিজেপি উঠে এসেছে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে। কিন্তু তারপর একাধিক বিধায়ক শাসকদলে যোগ দেওয়ায় শক্তিক্ষয় হয়েছে বিজেপির। তারপর পুরভোটে সেই শক্তি আরও স্তিমিত। এমনকী আগেকার ফলাফলও ধরে রাখতে ব্যর্থ গেরুয়া শিবির। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের যৌথ বিরোধিতা নিয়ে আগেও একাধিকবার কটাক্ষ শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়। বিশেষত রবিবার, ভোটের দিন যেভাবে তিন দলের প্রার্থী-সহ কর্মী, সমর্থকরা রাস্তায় বসে বিরোধিতায় নেমেছিলেন, তাতে তাঁদের মধ্যেকার ‘আঁতাঁত’ প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। মার্কশিট দেখার পর তৃণমূল সুপ্রিমোর ‘ভোকাট্টা’, ‘নো পাত্তা’, ‘স্যান্ডুইচ’ মন্তব্য সেই তারই প্রতিফলন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.