শুভঙ্কর বসু: কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলী নিয়োগকে কেন্দ্র করে এবার মামলা গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এই নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারী উত্তর কলকাতার বাসিন্দা শরদকুমার সিং। কলকাতা পুরসভার নির্বাচিত পুর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আপৎকালীন আইন প্রয়োগ করে পুরসভার বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদ দেরও ‘বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর’-এর সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে পুরসভার কাজকর্ম দেখাশোনা করছে এই প্রশাসক মণ্ডলী। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শরদবাবু।
যদিও কলকাতা হাই কোর্ট করোনা সংক্রান্ত আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রশাসক বোর্ডকে কেয়ারটেকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ২০ জুলাই পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। মূলত এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শরদকুমার সিং। সুপ্রিম কোর্টেও তিনি দাবি করেছেন, কলকাতা পুরসভা এভাবে প্রশাসক নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি ও সংবিধানের পরিপন্থী। কলকাতা পুর আইনে (১৯৮০) প্রশাসক বসানোর কোন সংস্থান না থাকলেও করোনা ভাইরাস বা মহামারিকে ঢাল করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁর বক্তব্য, কলকাতা পুর আইন অনুযায়ী একটি বোর্ডের কার্যকাল পাঁচ বছর। কিন্তু এক্ষেত্রে ‘রিম্যুভাল অফ ডিফিকাল্টিস’ অ্যাক্ট প্রয়োগ করে আদতে পুরো বোর্ডের কার্যকালের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা কিনা মৌলিক অধিকার এবং সংবিধানের ১৪, ১৯ ও ২১ নম্বর ধারার পরিপন্থী।
এর পাশাপাশি মামলায় তিনি আরও দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের যে দপ্তরের তরফে ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করে যাঁকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে ঘটনাক্রমে তিনিই ওই দপ্তরের মন্ত্রী। অর্থাৎ এক্ষেত্রে মন্ত্রী নিজেকেই পুরসভার প্রশাসক গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করেছেন, যে চূড়ান্ত বেআইনি ও সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী। যদিও প্রশাসক নিয়োগের আইনি বৈধতা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আপৎকালীন পরিস্থিতি কাটলে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা। তার আগেই মামলাটি শীর্ষ আদালতে গেল। উল্লেখ্য, এই একই বিষয়ে রাজ্য বিজেপির তরফে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেটিকেও মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করে হাই কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.