Advertisement
Advertisement
বাড়ি নির্মাণের সময় বাড়ল

৫ বছর নয়, লকডাউনের জেরে প্ল্যান পাশ হওয়ার পর বাড়ি নির্মাণে বাড়তি সময় দিল পুরসভা

কলকাতা-সহ রাজ্যের সব কটি পুরসভাতেই চালু হচ্ছে এই নিয়ম।

Municipalities extend time duration to complete construction work after planning
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 21, 2020 9:13 am
  • Updated:June 21, 2020 1:22 pm  

কৃষ্ণকুমার দাস: লকডাউনের জেরে বাড়ি নির্মাণে অনুমোদিত প্ল্যানের সময়সীমা আরও এক বছর বাড়িয়ে দিল কলকাতা পুরসভা। আগে যে কোনও বাড়ি বা বহুতলের নকশা অনুমোদন করার পাঁচ বছরের মধ্যে তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে হত। কিন্তু করোনার জেরে লকডাউনের ধাক্কায় সমস্ত নির্মাণ কাজই মাঝপথে থমকে গিয়েছে। আনলক ওয়ান পর্বে কাজ চালু হলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখনও ঠিকমতো শ্রমিক পাওয়া যায়নি। বস্তুত এই কারণে কলকাতায় অনুমোদিত প্ল্যানের সময়সীমা বাড়িয়ে ছ বছর করে দিলেন পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এই অতিরিক্ত এক বছরের জন্য পুরসভাকে কোনও অর্থ জমা দিতে হবে না। অর্থাৎ পাঁচ বছরের টাকায় এখন ছ’বছর ধরে নির্মাণ কাজ চালানো যাবে।

করোনা ও আমফানের পরিস্থিতি বিবেচনা করে কলকাতা পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করছে রাজ্যের অন্য পুরসভাগুলিও। প্রতিটি পুরসভার নিজেদের এলাকায় বৈধ প্ল্যানের সময়সীমা আরও এক বছর বাড়িয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেন পুরমন্ত্রী।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দেরি হলে জট বাড়ার আশঙ্কা, বিধানসভা নিয়ে এখনই জোট আলোচনায় বাম-কংগ্রেস]

রাজ্যের বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি শনিবার করোনা পরবর্তী নগরায়ন নিয়ে ভারচুয়াল মাধ্যমে বিশেষ আলোচনায় যোগ দেন পুরমন্ত্রী। বণিকসভার কর্মসমিতির সদস্য ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে রাজ্য সরকারের তরফে বিনিয়োগকারীদের নানা সুবিধার উল্লেখ করে বাড়ির প্ল্যানের বৈধতা বৃদ্ধির কথা জানান। শহরের সম্প্রসারিত অংশে প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বিশেষ সুবিধাযুক্ত জোন তৈরির ভাবনার উল্লেখ করে বণিকসভাকে প্রস্তাব দিতে বলেন। মুম্বই, বেঙ্গালুরুর ধাঁচে হেরিটেজ সম্পত্তিতে বহুতল নির্মাণ নিয়েও কথা হয় সভায়। সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে প্রস্তাব জমা দিলে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করে বিনিয়োগের স্বার্থে বিশেষ নীতি তৈরির আশ্বাস দেন তিনি।

বণিকসভার এক কমিটির কো-চেয়ারম্যান চৈতালি দাস পুরমন্ত্রীকে জানান, “পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে পাটের ব্যবহার করে হস্তশিল্পের দ্রুত সমৃদ্ধি ঘটছে। সুন্দরবনের মধুও উৎপাদন হচ্ছে।” বণিকসভার চেয়ারম্যান মুনিশ  ঝাঁঝারিয়া ও সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ বিবেক গুপ্তা ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় আমফান পরবর্তী শহরকে দ্রুত স্বাভাবিক করতে পথে নেমে নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবের পুরমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। ঠিকা আইন তৈরি হলেও এখনও অনেক বাড়ির ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়ারাই জটিলতা তৈরি করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন এক সদস্য। পুরমন্ত্রী জানান, বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। আইন পাস হয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও সুনির্দিষ্ট পলিসি তৈরি করে কার্যকর করা যায়নি। তবে বড়বাজার ও পোস্তা মার্কেট যে এখনই কলকাতার বাইরে যাচ্ছে না, তা এদিন স্পষ্ট করেন পুরসভার মুখ্য প্রশাসক। তিনি বলেন,“পরিকাঠামো তৈরি করে দেব বলেছি। অফিস বড়বাজারে বা পোস্তায় রেখে গোডাউন ডানকুনি বা লাগোয়া এলাকায় করতে বলেছি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এখনও সেভাবে সাড়া দিচ্ছেন না। শহরকে আরও গতিময় করতে সবাই না এগিয়ে এলে সংকট থাকবেই।”

[আরও পড়ুন: কাটা রাস্তা মেরামত না করে নতুন প্রকল্প শুরু করা যাবে না, নিদান পুরমন্ত্রীর]

শনিবার বণিকসভায় বৈঠকের শুরুতে অপরিকল্পিত নগরায়নের জেরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দেহ দাহ করা নিয়ে গড়িয়ার বোড়ালে অযথা বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পুরমন্ত্রী। বলেন,“যখন বোড়ালে টিবি হাসপাতাল ও শ্মশান তৈরি হয় তখন এলাকায় জনবসতি কার্যত ছিল না। এখন সস্তায় জমি কিনে, আবাসন গড়ে ঘনবসতি তৈরি হয়েছে। স্বভাবতই এই ঘিঞ্জি এলাকার সুবিধা নিয়ে উসকানি দিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।” পরিকল্পনা ছাড়া বাড়ি তৈরির জন্য সংযোজিত এলাকা যাদবপুর, টালিগঞ্জ ও বেহালার অনেক পল্লিতে নিকাশি বা জলের লাইন নেওয়া যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত পরিকল্পিত নগরায়নে বণিকসভার সদস্যদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়ে নীতি রূপায়ন ও কার্যকরে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ফিরহাদ হাকিম। ছিলেন মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দুই আধিকারিক ঋষভ কোঠারি ও আকাশ শাহ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement