গৌতম ব্রহ্ম: নীল-সাদা বনাম সবুজ-হলুদ। লাল-কালো বনাম লাল-সাদা। সবাই সবাইকে কাটছে! এমন দুর্ধর্ষ গগনযুদ্ধ আগে কখনও দেখেনি তিলোত্তমা। দশ দলে একেবারে তুল্যমূল্য লড়াই। কেউ নবান্নের ছাদে উঠে লড়ছে। কেউ ‘ছাতিমতলা’য় বসে। কেউ আবার ‘রাঙামাটি’র পথে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছে না। অবশেষে জয় হল নীল-সাদার। রানার্স লাল-কালো-হলুদ। ইনাম হিসাবে মোটা টাকা নগদ তো ছিলই। মিলল সুস্বাদু বোনাসও। পেটপুরে পিঠে ভক্ষণ।
ব্যাপারটা কী? খোলসা করা যাক। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে ঘুড়ি ওড়ানোটা বহু পুরনো ঐতিহ্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজের এলাকা জামনগরে লাটাই-ঘুড়ি নিয়ে নেমে পড়েছিলেন। শহর কলকাতাতেও নিয়ম করে বহু পাড়ায় ঘুড়ি উড়েছে। কিন্তু, বাঘাযতীন সাক্ষী রইল এক অভিনব প্রতিযোগিতার। দশটি দল অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইতালি, জার্মানি, ভারত। দলের সদস্যরা দেশের জার্সি পড়েই খেলেছেন। আকাশেও পতাকার মতোই উড়েছে ঘুড়ি। থেকে থেকেই আওয়াজ উঠেছে ‘ভোকাট্টা’।
অবশেষে জয়লাভ করেছে নীল-সাদা। মানে আর্জেন্টিনা। রানার্স জার্মানি। টুর্নামেন্টের উদ্যোক্তা উত্তম সাহা জানালেন, যুবক সঙ্ঘ ও ‘আর্জেন্টিনা ফ্যান ক্লাব’ বিগত আঠারো বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। পাড়ার আবাসনগুলির ছাদে উঠে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। এবং তারই মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও বড় আবাসন ‘নবান্ন’। পাশেই রয়েছে ‘ছাতিমতলা’, ‘রাঙামাটি’। ক্লাবের ছাদ ও উত্তমবাবুর বাজড়ির ছাদ তো ছিলই। গত বছর নবান্ন থেকে খেলছিল আর্জেন্টিনা মানে নীল-সাদা। কিন্তু. হেরে গিয়েছিল। এবার তাই ঠাঁই বদল করেন আর্জেন্টিনার ক্যাপ্টেন রাকেশ সিং।
উত্তমবাবু জানালেন, ‘এবার আর্জেন্টিনা আমার বাড়ির ছাদে ছিল। নবান্নের ছাদে ছিল জার্মানি। অবশেষে বারোটির মধ্যে দশটি ম্যাচ জিতে বিজয়ী হয় নীল-সাদা। মেলে ১০ হাজারের আর্থিক পুরস্কার। রানার্স হয় জার্মানি। সবাইকে অবশ্য মিষ্টিমুখ করে বিদায় করেছেন উদ্যোক্তারা। পেট পুরে খাইয়েছেন পিঠে। পাটিসাপটা ও পুলি পিঠে। ব্যবস্থাপনায় খুশি অংশগ্রহণকারীরা। জানালেন, ঘুড়ি, জার্সি সবই আয়োজকরা দেয়। বেশ একটা যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব তৈরি হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.