প্রতীকী ছবি
অর্ণব আইচ: ফের কলকাতায় ‘৪০৭ গ্যাং’-এর দৌরাত্ম্য। মালবাহী গাড়ি করে সারা শহরজুড়ে ঘুরে লোহার পাইপ চুরি করে বেড়াত এই গ্যাং। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুরে পুরসভার লোহার জলের পাইপ লুঠ করেই ধরা পড়ল দুষ্কৃতীরা। সিসিটিভির সূত্র ধরেই গ্যাংয়ের দুই মাথা বেহালার উজ্জ্বল সেউলি ও তিলতলার মহম্মদ কালামকে হরিদেবপুর থানার আধিকারিকরা গ্রেপ্তার করেন।
বুধবার তাদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের জামিনের আবেদন জানান লিগ্যাল এইডের আইনজীবী সৈকত রক্ষিত। সরকারি আইনজীবী তাদের জামিনের বিরোধিতা করেন। দুপক্ষের বক্তব্য শুনে ধৃতদের ১১ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
এই বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ২৫ বছরেরও আগে থেকে কলকাতা জুড়ে দৌরাত্ম্য শুরু করে এই ‘৪০৭ গ্যাং’। পুলিশ আধিকারিকদের মতে, এখন যারা ধরা পড়েছে, তারা এই গ্যাংয়ের ‘নতুন জেনারেশন’ হতে পারে। কিন্তু এদের অপরাধের পদ্ধতি একই। একেকটি ‘৪০৭ গ্যাং’য়ে থাকে দুই থেকে চারজন সদস্য। কখনও তারা বিশেষ মডেলের ওই মালবাহী গাড়ি ভাড়া করত। আবার কখনও বা তার চালককে নিজেদের গ্যাংয়ের সদস্য বানিয়ে নিত। ওই বিশেষ মডেলের মালবাহী গাড়িটি ভারী মাল বহন করতে সক্ষম।
এছাড়াও যে কোনও দ্রুতগামী গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে ওই গাড়ি। পুলিশের গাড়ি তাড়া করলেও সহজে ওই মালবাহী গাড়ি করে পালিয়ে যেত গ্যাংয়ের সদস্যরা। সাধারণত গভীর রাতেই মালবাহী গাড়ি নিয়ে বের হত এই ‘নতুন জেনারেশন’-এর ৪০৭ গ্যাংয়ের সদস্যরা। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন নির্মাণের জায়গা থেকে লোহার খাঁচা, লোহার রড লুঠপাট করা।
পুরসভার কাজ যেখানে হচ্ছে, সেখানেও নজর দিত গ্যাংয়ের সদস্যরা। জানা গিয়েছে, হরিদেবপুরের বনমালী ব্যানার্জি রোডের একটি জায়গায় নিকাশির কাজ চলছিল। তার জন্য পুরসভার ঠিকাদাররা লোহার পাইপ নিয়ে এসেছিলেন। সেই পাইপ রাস্তা থেকে নিজেদের গাড়িতে তুলে উধাও হয়ে যায় তারা। এই ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের হলে হরিদেবপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ প্রথমে চিহ্নিত করে ধৃতদের। সেই সূত্র ধরেই প্রথমে বেহালার জেমস লং সরণি থেকে উজ্জ্বলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাকে জেরা করে তিলজলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কালামকে। তাদের সঙ্গে ই এম বাইপাসে গিয়ে উদ্ধার করা হয় চুরির পাইপ। সস্তায় ওই পাইপ বিক্রির ছক কষেছিল তারা। তাদের জেরা করে এই গ্যাংয়ের বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.