দীপঙ্কর মণ্ডল: রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ঘাতকের গুপ্ত অনেক কথাই জেনে ফেললেন তদন্তকারীরা। ফুলবাগানে শাশুড়িকে হত্যা করা আত্মঘাতী হওয়া অমিত আগরওয়াল এর আগে বেঙ্গালুরুতে স্ত্রীকে খুন করে আজই ফিরেছে কলকাতায়। ফিরে শ্বশুরবাড়িতে এসেই এমন কাণ্ড। সোমবার বিকেলে ফুলবাগানের ওই আবাসনে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে আত্মঘাতী অমিতের পকেট থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। তাতেই রহস্যের পর্দা খানিকটা সরেছে।
বউয়ের সঙ্গে দু’বছর ধরে চলছে ডিভোর্সের মামলা। আর তা নিয়েই শাশুড়ির সঙ্গে বচসা। জামাই অমিতকে একটু বেশি বকাবকি করে ফেলেছিলেন শাশুড়ি। হঠাৎই দেখেন জামাইয়ের হাতে উঠে এসেছে আগ্নেয়াস্ত্র। দুই পা পিছিয়ে যান বৃদ্ধা। একটু দূর থেকে আটকে ওঠেন তাঁর স্বামী। এরপর ফ্ল্যাট কাঁপিয়ে গুলির আওয়াজ। দেখে পালিয়ে যান শ্বশুর। এরপর ফের গুলির শব্দ। সোমবার বিকেলে ফুলবাগানের অভিজাত আবাসনে গুলি চালিয়ে শাশুড়িকে খুনের পর আত্মহত্যা করে অমিত আগরওয়াল। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অমিত পকেট থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট। তা দেখে চোখ কপালে পুলিশের। সেখানে লেখা আছে, বেঙ্গালুরুতে স্ত্রী শিল্পীকে হত্যা করে জামাই অমিত আগরওয়াল চলে এসেছেন কলকাতায়। এখানে শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করে আত্মহত্যা করবেন তিনি।
যদিও কোনওমতে পালিয়ে বেঁচে গিয়েছেন শ্বশুর। সুইসাইড নোটটি দেখামাত্রই বেঙ্গালুরু পুলিশকে সতর্ক করে কলকাতা পুলিশ। বেঙ্গালুরুর ডিসিপি (হোয়াইটফিলড) নিজেই টিম নিয়ে ছুটে যান শিল্পী আগরওয়ালের বাড়িতে। সেখানে শিল্পীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, স্ত্রীকে খুনের পর সোমবারই বিমানে করে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় ফেরেন অমিত। তারপরে শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করতে চলে আসেন ফুলবাগানে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অমিত ও শিল্পী দু’জনই পেশায় চাটার্ড একাউন্টেন্ট। ওই দম্পতির এক সন্তানও আছে। কয়েক বছর আগে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। অমিত ও শিল্পীর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা হয়। বেঙ্গালুরুতে থাকেন শিল্পীর ভাইও। কলকাতায় থাকতেন বৃদ্ধ দম্পতি। এদিন ফ্ল্যাট থেকে যে পিস্তলটি উদ্ধার হয়েছে, তাতে রয়েছে চারটি গুলি। পুলিশের ধারণা, আগ্নেয়াস্ত্রটি বৈধ। সেই কারণেই তিনি বিমানে করে নিয়ে আসতে পেরেছেন। বেঙ্গালুরু ও উত্তরপাড়ার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছে কলকাতা পুলিশ। প্রতিবেশী ও পরিজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.