স্টাফ রিপোর্টার: বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ রেখে চলা, গেরুয়া শিবিরের উসকানিতে দলীয় নেতৃত্বকে আক্রমণ করার অভিযোগ। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কৌস্তভ বাগচীকে (Kaustav Bagchi)। কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের অভিযোগ, বিজেপির উসকানিতে সবসময় তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে মুখ খুললেও আজ পর্যন্ত কৌস্তভ পদ্মশিবিরের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি। এটা দল বিন্দুমাত্র ভাল চোখে নেয়নি। দলের সিংহভাগ নেতৃত্বই তাঁর আচরণ ও বক্তব্যকে সন্দেহের চোখে দেখেছে বলেই মুখপাত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস (Congress) নেতারাই বৃহস্পতিবার প্রদেশ দপ্তরে বসে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার চেয়ে মাথা মুড়িয়ে ন্যাড়া হয়েছিল কৌস্তভ। এবার তো দলই মুখপাত্র থেকে বাদ দিয়েছে, তা হলে ফেসবুকে ঝড় তোলা সেই বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে কোথায়, কার কাছে কীভাবে প্রতিবাদ জানাবে?’’ দলীয় নেতাদের মত, ‘‘কংগ্রেস কর্মীরা কৌস্তভের মুখ আর মুখোশ দুটোই এতদিনে চিনতে পেরেছে। ওর বিজেপিকে তুষ্ট করতেই তাদের বিরুদ্ধে একটাও কথা বলছে না। আর বিজেপির উসকানিতেই এখন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে নিশানা করেছে।’’
প্রদেশ কংগ্রেসের এক রাজ্য সম্পাদকের এদিন মন্তব্য, ‘‘আসলে গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল গোছের নেতা হলে যা হয়। নিজের পাড়ায় সঙ্গে এক পিস লোক নেই। এক বছর সময় দিলেও দশজন লোক জোগাড় করতে পারবে না। যতসব কাগুজে বাঘ, ফেসবুক আর দু’চারটে বাজারি টিভি চ্যানেলের ‘গ্যাস’ খেয়ে ক্যামেরার সামনে মাথা ন্যাড়া করে তখন চমক দিয়েছিল। আসলে পুরোটাই তো বিজেপির সঙ্গে গটআপ করে নাটক করা। তলে তলে কাদের সঙ্গে সেটিং তা প্রদেশ কংগ্রেস থেকে এআইসিসি, সবাই ধরে ফেলেছে।’’
দিনকয়েক আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) সম্মতি নিয়েই মুখপাত্রদের ২৬ জনের নতুন একটি প্যানেল প্রকাশ করেছে। প্রথম নামটি অবশ্যই সৌম্য আইচ রায়। এরপর নিলয় প্রামাণিক, অশোক ভট্টাচার্য, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, লিপিকা ঘোষ, সাইনা জাভেদ থেকে শুরু করে অশোক সরকারের নাম রয়েছে। তালিকাটি প্রদেশ দপ্তর থেকে সমস্ত টিভি চ্যানেলেও টক শো’র (Talk Show) বক্তা হিসাবে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কৌস্তভ বাগচীকে আর কোনও টিভি চ্যানেল এবার থেকে কংগ্রেস মুখপাত্র হিসাবে ডাকতেও পারবে না। প্রদেশ কংগ্রেসের এমন সিদ্ধান্তে স্পষ্ট, নানা কর্মসূচি বা টক শো’তে ‘বিজেপির বিরুদ্ধে মুখে তালা দেওয়া’ কৌস্তভের আচরণে ও ভূমিকায় কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এতটাই ক্ষুব্ধ যে, দলের হয়ে কোথাও আর তাঁকে মুখ খুলতে দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের এক সিনিয়র সহ-সভাপতি এদিন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘তখন তো টিভি চ্যানেলের উসকানিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করার শপথ নিয়ে মাথা নেড়া করেছিল। তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন বহাল তবিয়তেই। কিন্তু কৌস্তভের তো গলায় ফাঁস দিয়ে কথা বলাই বন্ধ করে মুখপাত্র থেকে সরিয়ে দিল প্রদেশ কংগ্রেস। এবার কী করবে এই কাগুজে বাঘ?’’ কৌস্তভ এতদিন বলেছেন, ‘‘দলের নিচু তলার কর্মীদের আবেগের কথা আমি তুলে ধরি। কিন্তু ছাত্র পরিষদের মহাজাতি সদনের সভায় কৌস্তভ দলের সেই নিচুতলার কর্মীদের হাতেই বেধড়ক মার খেয়েছে। তাঁর দল বিরোধী ভূমিকা কংগ্রেসের সর্বস্তরে নজরে পড়েছে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.