অভিরূপ দাস: এর আগে গোটা বিশ্বের ১৪ জন এই অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১১ জন মারা গিয়েছেন। তিনজন কোনও ক্রমে বেঁচে বাড়ি ফিরেছেন। সেই তালিকায় চতুর্থ সংযোজন কাটোয়ার অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসা পরিভাষায় এ অসুখের নাম “প্রাইমারি ইডিওপ্যাথিক রেট্রোপেরিটোনিয়াল নেক্রটাইজিং ফাসিআইটিস।” পেটের ভিতরের অংশ অর্থাৎ নাভি থেকে পিছন দিকে শিরদাঁড়া পর্যন্ত পেটের অভ্যন্তরে নানান অঙ্গ পচতে শুরু করে। আরও পরিস্কার করে বললে প্রতিটি অঙ্গের চর্বি, টিস্যু, মাসল, বিভিন্ন নার্ভ দিয়ে জোড়া থাকে। সেগুলি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যায়। শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। প্রচণ্ড ব্যাথায় নড়াচড়া করতে পারেন না রোগী। এসব ক্ষেত্রে মৃত্যু অবধারিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ১ শতাংশেরও কম।
তবে সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখালেন ডা. শুদ্ধসত্ব সেন। এর আগে সারা বিশ্বের যে তিনজন বেঁচে বাড়ি ফিরেছেন তাদের বয়স কুড়ি বছরের মধ্যে। কিন্তু এক্ষেত্রে রোগীর বয়সও অনেকটাই বেশি ছিল। কাজটাও ছিল কঠিন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহের কথা। ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে মরণাপন্ন অবস্থায় এসেছিলেন বিরল অসুখে আক্রান্ত অরিন্দম। জড়বস্তুর মতো বিছানায় শুয়ে থাকতেন ২৪ ঘন্টা। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা জানিয়েছেন, বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। হাল ছাড়েননি চিকিৎসক। দীর্ঘদিন ধরে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রেখে দেওয়া হয় রোগীকে।
এরপর ডা. সেন দীর্ঘ সময় ধরে নানা অস্ত্রোপচার করে তার শরীরের ভিতর থেকে পচে যাওয়া অংশ বাদ দেন। তাকে সুস্থ করে তোলেন। টানা ১৫ দিন পর তিনি ছাড়া পান। এই ঘটনা স্থান পেতে চলেছে বিশ্বের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জার্নালে। চিকিৎসক শুদ্ধসত্ব সেন জানিয়েছেন, তিলোত্তমায় যে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব তা প্রমাণিত হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.