অর্ণব আইচ: জুলাই, অক্টোবর, নভেম্বর – গত পাঁচ মাসের মধ্যে তিন তিনবার টার্গেট দেওয়া হয়েছিল সুপারি কিলারদের। তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুন করার বরাত দেওয়া হয়েছিল বিহারে বসে। কিন্তু প্রতিবারই ফেল! শেষবার তো টার্গেটের অনেকটা কাছে এসেও ব্যর্থ। কিন্তু কেন তিনবার সুযোগ পেয়েও অপারেশন সম্পূর্ণ করতে পারল না পেশাদার শুটাররা? ধৃতদের জেরা করে এই সংক্রান্ত বড়সড় তথ্য মিলেছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। তাতে স্পষ্ট, প্রথমের বরাত গ্রহণ করলেও কলকাতায় শাসকদলের জনপ্রতিনিধিকে খুনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা থেকে বিরত ছিল সুপারি কিলাররা।
তদন্ত সূত্রে খবর, প্রথমবার জুলাই মাসে ১০৮ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের বরাত পেয়ে বিহার থেকে কলকাতায় আসে দুষ্কৃতীদের একটি টিম। এর পর কাজের বিস্তারিত জানতে গিয়ে তাঁরা সুশান্তবাবুর পরিচয় পান শাসকদলের কাউন্সিলর হিসেবে। সূত্রের খবর, তখনই পিছু হঠে তারা। যে খুনের বরাত দিয়েছিল, তাকে সাফ জানানো হয়, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ‘সরানো’র ঝুঁকি তারা নেবে না। কারণ, তাতে বিস্তর ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আগাম যে সুপারি দেওয়া হয়েছিল, তা ফিরিয়ে দিয়ে ফের বিহারে চলে যায় শুটাররা।
দ্বিতীয়বার পরিকল্পনা হয় অক্টোবরে, দুর্গাপুজোর সময়। ঠিক হয়, বিসর্জনের দিন শোভাযাত্রার মাঝে শুটআউটে নিকেশ করতে হবে তৃণমূল কাউন্সিলরকে। সেইমতো ফের শুটারের দল আসে কলকাতায়। কিন্তু এখানে দুর্গোৎসবের ভিড় দেখে তাদের আশঙ্কা হয়। তাদের তরফে বলা হয়, ভিড়ের মাঝে গুলি করলে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদি বা লক্ষ্যভেদ করতে সফল হয়, তার পরও ভিড় এড়িয়ে পালানোর ঝুঁকি থেকে যায়। ধরা পড়লে গণপ্রহার অনিবার্য বলে জানায় তারা। ফলে সেবারও বাতিল করতে হয় পরিকল্পনা।
এর পর নভেম্বরের ১৫ তারিখ, বাড়ির সামনে বসা সুশান্তবাবুকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি ছোড়ার চেষ্টা করলে পিস্তলের ট্রিগার জ্যাম হয়ে তা আর বেরয়নি। কপালজোড়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। এবার অবশ্য যাদের পাঠানো হয়েছিল, তাদের কাছে সুশান্তবাবুর রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জেরায় ধৃতদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। ফলে তিনবার ব্যর্থ এবং প্রায় গোটা চক্র-সহ ধরা পড়া। এই ঘটনায় মূল মাস্টারমাইন্ড আসল ইকবালের খোঁজ চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.