কৃষ্ণকুমার দাস: দেবাঞ্জন কাণ্ডের তদন্তে নেমে এবার কলকাতা পুরসভাকে (Kolkata Municipal Corporation) পাঁচ দফা প্রশ্ন পাঠিয়ে দ্রুত জবাব চাইল তদন্তকারী গোয়েন্দাদের টিম লালবাজারের ‘সিট’। কারণ, পুরসভারই যুগ্ম কমিশনার পরিচয় দিয়েই কলকাতা ও শহরতলিতে যেমন ভুয়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্প বসিয়েছিল তেমনই একাধিক সংস্থাকে কর্পোরেশনের প্যাডেই ওষুধ ও নানা সামগ্রী সরবরাহের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দিয়েছিলেন ধৃত ভুয়া আইএএস। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুরসভার নিজস্ব ‘পুরশ্রী বিবর্ধন’ হলোগ্রাম যেমন ব্যবহার করেছিলেন তেমনই ‘যুগ্ম কমিশনার’-এর নকল পরিচয়পত্র সবসময় গলায় ঝোলানো থাকত। পুর অফিসারের মতোই পরিচয়পত্র, নম্বর ও হলোগ্রাম বানিয়ে নিখুঁত প্রতারণা চক্র চালানোয় দেবাঞ্জনের মুন্সিয়ানা দেখে কার্যত বিস্মিত গোয়েন্দারা। বস্তুত সেই কারণেই পুরসভার স্পেশ্যাল কমিশনারের কাছে বুধবার পাঁচ দফা প্রশ্ন পাঠিয়ে জবাব চাইলেন সিটের গোয়েন্দারা।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের তদন্তে তৈরি ‘সিট’ (SIT) জানতে চায় কর্পোরেশনের নিজস্ব হলোগ্রাম লোগোটি পুরনিগমের অন্দরমহলের কেউ দেবাঞ্জনকে দিয়েছিল কি না? নিজের আইডেন্টিটিকার্ড তৈরি থেকে প্যাড ছাপানো, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার মতো জটিল নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনায় পুরভবনে কেউ কি দেবাঞ্জনকে সাহায্য করছিল? প্রশ্নমালার উত্তর দেওয়া নিয়ে সন্ধেয় পুরকমিশনার বিনোদ কুমারের ঘরে শীর্ষ অফিসাররা জরুরি বৈঠকে বসেন। চিঠির কথা জানানো হয় মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকেও। অন্যদিকে, এদিনই ফের কসবার শান্তিপল্লিতে পুরসভার ভুয়ো অফিসে দেবাঞ্জনকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালান সিটের অফিসাররা। এখান থেকে এদিনও উদ্ধার হয়েছে ভুয়ো আইএএস ও তাঁর প্রতারণা চক্রের বহু বিস্ফোরক নথি এবং পুরসভার নকল প্যাড, হলোগ্রামও।
সিটের তদন্তকারী গোয়েন্দারা কলকাতা পুরসভার কাছে এদিন যে প্রশ্নগুলি জানতে চেয়েছে তা হল (১) দেবাঞ্জন দেবকে পুরসভা যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার কোনও পরিচয়পত্র দিয়েছিল কি না? যে আইডি কার্ডের (ID Card) সিরিয়াল নম্বর ই-১২৫৯৭ এবং পুরকর্মীর নম্বর ২৫৭৫৭।
(২) পুরসভার নিজস্ব হলোগ্রাম দেওয়া ১২০টি ‘পুরশ্রী বিবর্ধন’ লোগো দেবাঞ্জনদেব বা পুরনিগমের কর্মচারী নন কখনও কোনও সময় দেওয়া হয়েছিল কি?
(৩) কসবার (Kasba) ১৭০ শান্তিপল্লিতে কলকাতা পুরসভার কোন স্পোর্টস ফেডারেশনের অফিস আছে কি না? অথবা ওই ঠিকানায় স্পোর্টস ফেডারেশনের নামে কোন লেটার হেড পুরসভা ব্যবহার করত কি?
(৪) তদন্ত সূত্রে খবর, ৯ ইন্ডিয়ান এক্সচেঞ্জ প্লেস, রুম নম্বর-১২ (তৃতীয় তল) এর ঠিকানায় ‘লেজার হলোগ্রাম প্রাঃ লিমিটেড’ নামে সংস্থাকে পুরসভা কি হলোগ্রাম তৈরির কোন ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছিল?
(৫) শরণ্যা আঢ্য, পিতা সুব্রত কুমার আঢ্য নামে (যার আইডি নম্বর পি-২৫৭৬৯) পুরসভায় কোন কর্মী কাজ করেন?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.