ছবি: প্রতীকী।
অর্ণব আইচ: কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন (Kasba Fake vaccine) কাণ্ডে এবার পুলিশের জালে আরও দু’জন। সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জনের খুড়তুতো ভাই কাঞ্চন দেব এবং স্বাস্থ্যকর্মী শরৎ পাত্রকে। এই শরৎ পাত্রই কসবার ক্যাম্পে সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে (Mimi Chakraborty) ভুয়ো টিকা দিয়েছিলেন বলে জেরায় জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে আরও জানা গিয়েছে, শরৎবাবু দেবাঞ্জনের কথামতো বিভিন্ন ক্যাম্পে ঘুরে শুধুই ইঞ্জেকশন দিতেন। এই কাজের ভার ছিল তাঁর উপর। আর ভাইয়ের কুকীর্তির শরিক ছিলেন কাঞ্চনও। দেবাঞ্জনের মতো কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক আধিকারিকের ভুয়ো পরিচয় দিয়ে কাজ চালিয়েছিলেন তিনি। যদিও তাঁর দাবি, এত বড় জালিয়াতির কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। মঙ্গলবার এদের আদালতে পেশ করা হবে। এই মামলায় এবার কলকাতা পুলিশের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)।
জাল যত বিস্তৃত হচ্ছে, ততই যেন নতুন করে সামনে আসছে একাধিক গোপন তথ্য। খাস শহরে ভ্যাকসিন জালিয়াতি কাণ্ডের মূল পান্ডা ভুয়ো ‘IAS অফিসার’ দেবাঞ্জন দেবকে গ্রেপ্তারির পর একে একে অন্যদের হদিশ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের তৈরি SIT তদন্তভার নেওয়ার পরই এ নিয়ে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করল। এর আগে স্থানীয় কাউন্সিলর-সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে তাদের ২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে নিয়েছে। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই গিয়েই বেরিয়ে আসছে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আরও একাধিক নাম। তারই মধ্যে দু’জন – দেবাঞ্জনের খুড়তুতো ভাই কাঞ্চন এবং স্বাস্থ্যকর্মী শরৎ পাত্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, কাঞ্চন নিজেকে পুরসভার (KMC) প্রশাসনিক আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ৩ বছর ধরে এ ধরনের বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর শরতের কাজ ছিল শুধুই টিকা দেওয়া। তিনি দেবাঞ্জনের নির্দেশে বিভিন্ন শিবিরে ভ্যাকসিন দিতেন। জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে কসবার ক্যাম্পে তিনিই সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন। কসবা ছাড়াও সোনারপুর এবং সিটি কলেজের ক্যাম্পেও ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন তিনি। দেবাঞ্জনের কুকীর্তির কথাও শরৎ জানতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
দেবাঞ্জনের জালিয়াতির বহর দেখে চোখ কপালে অনেক পুলিশকর্তারই। পরিবার, পারিবারিক বন্ধু এবং একাধিক হেভিওয়েট নেতাদের যেভাবে নিজের প্রতারণার জালে সে জড়িয়ে ফেলেছিল, তা যে বেশ পাকা মাথার কাজ, তাতে আর সন্দেহ নেই কারোরওই। জানা গিয়েছে, একাধিক ভুয়ো পরিচয়ের মধ্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের সঙ্গেও যুক্ত ছিল বলে ভুয়ো পরিচয় জাহির করত দেবাঞ্জন। সেই সংস্থায় ভুয়ো ভোট করিয়ে নিজেক জয়ীও ঘোষণা করে। এসব তথ্য হাতে আসায় রীতিমতো চমকে উঠছেন তদন্তকারীরা। দেবাঞ্জনের ভুয়ো কাজকারবারের জাল যে আরও কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত, তা ভেবে আকুল তদন্তকারীরাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.