ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে হামলার জন্য বিহারের বেউরের জেল ফেরত আসামি আদিল হুসেইনকে বরাত দিয়েছিল আফরোজ ওরফে গুলজার। হামলার পরই কলকাতা থেকে দুবাই পালিয়ে যায় সে। এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড গুলজারের সঙ্গে কলকাতায় থেকে রেইকিও করেছিল আদিল। তৈরি করে দিয়েছিল হামলার ব্লু প্রিন্ট। গুলজারকে জেরা করে এসব তথ্য জানা গিয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, খুনের অভিযোগে পাটনার বেউর জেলে বন্দি ছিল আদিল হুসেইন। জেলে থাকাকালীনই কুখ্যাত পাপ্পু চৌধুরীর গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। জেল থেকে বেরিয়ে পরে পাপ্পুর সঙ্গে যোগাযোগ করে আদিল। তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার পিছনে পাপ্পু চৌধুরী গ্যাংয়ের যোগ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ধৃত হামলাকারী যুবজার সিং-সহ বিহার থেকে বাকি আততায়ীরা সকলেই ওই গ্যাংয়ের সদস্য। যার মধ্যে দুজন শার্প শুটারও ছিল। কাউন্সিলরকে খুনের ছক কষার পরই গুলজার বিহারে যায়। সেখানে আদিলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। এই আদিলই নিজেকে ইকবাল বলে পরিচয় দিয়েছিল বলে গোয়েন্দারা জানতে পারেন।
বিহারেই থাকাকালীনই কাউন্সিলরকে খুনের জন্য আদিলকে বরাত দিয়ে আসে গুলজার। সেইমতো আদিল পুজোর আগে কলকাতায় চলে আসে। খিদিরপুরে একটি হোটেল ওঠে। সেই সময় মুঙ্গের থেকে অস্ত্রও নিয়ে আসে। তারপর আততায়ীদের ধাপে ধাপে নিয়ে আসে। কীভাবে হামলা করা হবে, তার ব্লু প্রিন্টও তৈরি করে দেয়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পুজোর আগেই কলকাতায় এসে গুলজারকে সঙ্গে নিয়ে আদিল নিজেও রেইকি করেছিল। পরিকল্পনা ছিল, হামলার পর সে দুবাই পালিয়ে যাবে। সেইমতো কলকাতায় থাকাকালীন পাসপোর্ট তৈরি করে নিয়েছিল। কলকাতা থেকেই সে দুবাই চলে যায়।
এদিকে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা জানতে পারেন, দুবাইয়ে পাপ্পু সিং নামে বিহারের এক কুখ্যাত অপরাধী গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, দুবাইতে পাপ্পু সিংয়ের আশ্রয়ে থাকতে পারে আদিল। সেজন্য বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে লালবাজার গোয়েন্দারা যোগাযোগ করছেন বলে খবর। তাঁদের সন্দেহ, এই পাপ্পু সিং পাপ্পু চৌধুরীও হতে পারে। কারণ পাপ্পু চৌধুরীও বিহারে নেই। বহুদিন ধরে সে ফেরার। গুলজারও জেরায় জানিয়েছিল, সে কাজের জন্য দুবাই ছিল অনেকদিন। গুলজারের সঙ্গে পাপ্পু সিংয়ের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
কাউন্সিলরের উপর হামলার তদন্তে পরতে পরতে রহস্য জড়িয়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিরা পলাতক। ইকবাল নাম নিয়েও তদন্তকারীদের ধোঁয়াশা রয়েছে। বিহারে গিয়েও ইকবাল নামের কাউকে পায়নি পুলিশ। তাঁদের অনুমান, এই ইকবাল আদতে আদিল। হামলার মোটিভও এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। কেবলমাত্র দু’হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে বিতর্কের জেরে কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে মনে করছেন না তদন্তকারীরা। এর পিছনে এলাকা দখলের কোনও গল্প থাকতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.