সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দলে কার গুরুত্ব বেশি হবে, তা দলই ঠিক করবে। দেবশ্রী ইস্যুতে শোভন-বৈশাখীকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বুধবার শ্যামবাজারে ধরনা মঞ্চে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেই সংবাদমাধ্যমকে বলেন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক। তাঁর সাফ কথা, ‘ওঁরা দলে থাকবেন কিনা, সেটা একান্তই ওঁদের ভাববার বিষয়। সেটা নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। তবে দলে কার গুরুত্ব বেশি এটা কোনও ব্যক্তি ঠিক করে না, দল ঠিক করে।’ গত কয়েকদিন ধরে যে মান-অভিমান পাল চলছে তাতে এবার দাঁড়ি টানতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। যার ইঙ্গিত এদিন দিয়ে দিলেন কৈলাস।
যোগদানের দু সপ্তাহের মধ্যেই বিজেপিতে মোহভঙ্গ হয়েছে শোভন ও বৈশাখীর। তার অন্যতম কারণ, দেবশ্রী রায়। দুজনের শত আপত্তি সত্ত্বেও রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়কের বিজেপিতে যোগদান প্রায় পাকা। এমতাবস্থায় দলে অসম্মানিত বোধ করছেন দুজনে। দেবশ্রীকে নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা আগেও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সূত্রের খবর, হাই কমান্ড দেবশ্রীর যোগদানে সবুজ সংকেত দেওয়ায় দল ছাড়ার মনস্থির করে ফেলেছেন তাঁরা। ব্যস! তাতেই অস্বস্তিতে পড়ে বিচ্ছেদ আটকাতে মাঠে নামেন কেন্দ্রীয় নেতা তথা দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও অরবিন্দ মেনন। কিন্তু প্রত্যেকের কাছেই একই অনুরোধ রেখেছেন শোভন ও বৈশাখী, বিজেপি থেকে নিষ্কৃতি চান তাঁরা।
আবেদন নিবেদনে কাজ না হওয়ায় শেষে মাঠে নামেন মুকুল রায়। শোভন-বৈশাখীর মানভঞ্জনে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত নিজের নয়াদিল্লির বাসভবনে বৈঠক করেন বিজেপি নেতা। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চা-চক্রের শেষে মুকুল রায় বলেন, শোভন ও বৈশাখী দলেই আছেন। দল ছাড়ার কোনও প্রশ্নই নেই। একই সুর শোনা যায় শোভন-বৈশাখীর গলাতেও। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় ফিরে বিমানবন্দরে ফের উলটো সুর শোনা যায় দুজনের গলায়। নিজেদের পুরনো অবস্থানেই তাঁরা অনড়, তা হাবেভাবে বুঝিয়ে দেন শোভন-বৈশাখী। এমনকী, মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের সভায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন, ‘নতুন বউ পরিবারে এলে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়। পরে সব ঠিক হয়ে যায়।’ সেই কটাক্ষও খুব একটা ভালভাবে নেননি তাঁরা, তা বুঝিয়ে দেন শোভন-বৈশাখী।
তারই প্রেক্ষিতে বুধবার কলকাতায় নেমেই কৈলাস বিজয়বর্গীয় দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন নিজের মন্তব্যে। তাঁরা দলে থাকবেন কিনা তা নিয়ে ভাবিত নয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তা স্পষ্ট করে দেন বিজেপি নেতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, শোভন-বৈশাখীর দাবিদাওয়াকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তা একপ্রকার দরজা দেখিয়ে দেওয়ার শামিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.