অভিরূপ দাস: পাড়ার মোড়ের হেঁজিপেঁজি কোনও দোকান নয়। পুরসভার আতস কাঁচের নীচে শহর কলকাতার অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকানের মিষ্টান্ন। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে যাঁদের একের পর এক আউটলেট। বিক্রিও হয় হুড়মুড়িয়ে। সেই কেসি দাশের মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করল কলকাতা পুরসভা। পুরসভার ল্যাবরেটরিতে তা পরীক্ষা হচ্ছে।
সম্প্রতি কেসি দাশ থেকে মিষ্টি কিনেছিলেন কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনার জ্যোতির্ময় তাঁতি। তা মুখে দিতে গিয়েই বিপত্তি। “মিষ্টিটা মুখে দিয়েই সন্দেহ হয়। কাগজের মোড়কে ছিল সন্দেশটা। মুখে দিয়েই মনে হয় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নীচের অংশটা কেমন আঁঠা আঁঠা।” জানিয়েছেন তিনি। প্রশ্ন ওঠে, আমজনতা তবে কি খাচ্ছেন? বাইরে এখন গ্রীষ্মের চরম দাবদাহ। গরমের জেরে পেট খারাপে ভুগছেন অনেকেই। এমতাবস্থায় নষ্ট হয়ে যাওয়া মিষ্টি খাওয়া বিপজ্জনক। মিষ্টি নষ্ট হয়ে গেলেও অনেকেই মুখে দিয়ে তা বুঝতে পারেন না।
চিকিৎসকরাও বলছেন, এমন তারিখ পেরনো মিষ্টি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক। দ্রুত কলকাতা পুরসভার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিকরা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন কেসি দাশের মিষ্টি। ফুড সেফটি বিভাগের আধিকারিক ডা. তরুণ সাফুই জানিয়েছেন, কেসি দাশের মিষ্টি নিয়ে এর আগেও অভিযোগ এসেছে। হাজার হাজার মানুষ শহর কলকাতার ছোট বড় দোকান থেকে খাবার কেনেন। তাঁরা যাতে সঠিক, স্বাস্থ্যকর খাবার খান তা দেখা কলকাতা পুরসভার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্ব। সেই কারণেই কেসি দাশের মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি দেখা যায় মিষ্টিতে গন্ডোগোল রয়েছে সেক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ ঘটনা শুনে কেসি দাশের কর্ণধার ধীমান চন্দ্র দাশ জানিয়েছেন, তীব্র দাবদাহের জন্যই মিষ্টি ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঙালিকে মিষ্টি খাইয়ে আসছে কেসি দাশ। কর্ণধার ধীমান চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, বাঙালি মিষ্টি তরতাজা থাকে ১২ ডিগ্রিতে। সেখানে এই মুহূর্তে শহরের তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪৩ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এই তীব্র গরমে মিষ্টি ঠিক রাখা কষ্টকর। ধীমানবাবুর বক্তব্য, দেখা গিয়েছে রসগোল্লা, রসমালাইয়ের মতো মিষ্টি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই গরমে। গরম এতটাই ৫ ঘন্টার মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রসগোল্লা।
ধীমানবাবুর দাবি, নষ্ট হয়ে যাওয়া মিষ্টি ফেলে দিতে বলা হয়েছে দোকানের কর্মীদের। কেসি দাশের আউলেটগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও অত্যধিক গরমে তাপমাত্রা নির্দিষ্ট রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধীমানবাবু। তবে পুরসভার খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ মিষ্টির নমুনা সংগ্রহ করায় খুশি কেসি দাশের অধিকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, ল্যাবরেটরিতে যদি দেখা যায় মিষ্টিতে কোনও গন্ডোগোল রয়েছে দ্রুত তা সংশোধন করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.