ছবি: প্রতীকী
কৃষ্ণকুমার দাস: বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডের রোগীর শরীরেও মিলল করোনা পজিটিভ। যা নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম আতঙ্ক। সেসময় ওই ওয়ার্ডে কর্মরত ইন্টার্নদের করোনা পরীক্ষা নিয়ে তৈরি হয়েছে টানাপোড়েন। চিকিৎসকদের পর এবার তাঁরাও কাজ করতে গিয়ে করোনা আতঙ্কে কাঁটা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠছে উদাসীনতার অভিযোগ।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে। তার দিন দুই আগে সাধারণ অসুখ নিয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভরতি হন এক রোগী। সোমবার থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সন্দেহ হওয়ায় সেখানে কর্মরত জুনিয়র ডাক্তাররা সোয়াব টেস্টে পাঠান। মঙ্গলবার রাতে সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তারপরই জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে আতঙ্ক দানা বাঁধে। সূত্রের খবর, সেসময় এনআরএস হাসপাতাল থেকে চারজন জুনিয়র ডাক্তারকে বেলেঘাটা আইডি’তে পাঠানো হয়েছিল ডিউটি করতে। এই চারজনের মধ্যে এক ইন্টার্নের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে। নোভেল করোনা ভাইরাস হাঁপানি, হাই ব্লাড সুগার, হার্টের রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকির। তাই ওই ইন্টার্ন ডাক্তার নিজেকে নিয়ে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন।
পরেরদিন অর্থাৎ বুধবার সকালে তাঁরা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের উচ্চপদস্থ এক আধিকারিককে ওই রোগীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে তাঁর কাছে জানতে চান, তাঁদের এই মুহূর্তে কী কর্তব্য। টেস্ট করানো হবে নাকি তাঁরা কোয়ারেন্টাইনে যাবেন, সেসব প্রশ্ন করেন। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, ওই আধিকারিক তাঁদের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে হস্টেলে ফিরে যেতে বলেন। রিপোর্টের কথাও কাউকে জানাতে বারণ করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে ফের তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়। উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠকের পর ফের জানানো হয় যে, করোনা পজিটিভ রিপোর্টের কথা কাউকে বলার প্রয়োজন নেই। তা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারাই ঠিক করবেন।
এরপর ইন্টার্ন ডাক্তাররা তাঁদের নিজেদের হস্টেল অর্থাৎ এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ফিরে সুপারের দ্বারস্থ হন। তিনিও এঁদের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়টি উড়িয়ে দেন। হতাশ হয়ে ওই চার জুনিয়র চিকিৎসক প্রিন্সিপাল শৈবাল চক্রবর্তীর কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। তিনি স্মারকলিপি গ্রহণ করে তাতে স্বাক্ষর করলেও, করোনা পরীক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে নারাজ। অভিযোগ, প্রিন্সিপালের ঘরে থাকা অন্যান্য আধিকারিকরা কার্যত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন তাঁদের। পরে অবশ্য পরিস্থিতির বদল হয়। চার জুনিয়রকে হস্টেলে রাখার কথা স্বীকার করেছেন নীলরতনের প্রিন্সিপ্যাল ডাঃ শৈবাল মুখোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, “শুক্রবার ওদের আইডি’তে পাঠাবো, প্রোটোকল মেনে টেস্ট করার হলে ওখানে হবে।” করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসে হস্টেলের অন্যান্যরাও আক্রান্ত কি না, সেই নিয়ে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.