ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সরকারি হাসপাতালে আন্দোলনের জেরে চিকিৎসা পরিষেবায় কোপ। ফেরানো হচ্ছে একের পর এক রোগীকে। এমনকী এমারজেন্সিতেও চিকিৎসা মিলছে না। পুজোর আগে থেকে রোজ প্রায় এই দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ (RG Kar Medical College) হাসপাতালে। সৌজন্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। অক্টোবরের গোড়া থেকেই এই আন্দোলনের জটে আটকে হাজার হাজার রোগীর সুস্থতা। রবিবার এই সমস্যা কাটাতে চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসলেন জনপ্রতিনিধিরা। ছিলেন স্বাস্থ্যভবনের তরফে পাঠানো সদস্যরাও। প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠকের পরও সমাধান সূত্র মিলল না। আন্দোলনে অনড়ই জুনিয়র ডাক্তাররা। ফলে আগামী সপ্তাহেও আর জি করের পরিষেবা (Medical services) বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
আর জি করে গেলেই অন্যত্র রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। এমনই অভিযোগ রোগীদের। কলকাতার এই মেডিক্যাল কলেজ ওরফে সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে এমনই কথা রটে গিয়েছে এখন। তবে রটনা মিথ্যে নয়। এখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে। আর সিনিয়রদের ছুটি। ফলে রেফার ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু একটা সরকারি হাসপাতালে দিনের পর দিন এভাবে চিকিৎসা অমিল? এ নিয়ে রোগীদের ক্ষোভ বাড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
এই অবস্থায় রবিবার মোহিত মঞ্চে আর জি করের চিকিৎসক সংগঠন, আন্দোলনরত চিকিৎসক এবং জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। ছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন, বিধায়ক নির্মল মাজি, অতীন ঘোষ, তাপস রায়, পরেশ পাল। দেড়ঘণ্টা ধরে আলাপ-আলোচনার পরও অবশ্য কোনও সমাধান মিলল না। এই বৈঠকে বিধায়ক, সাংসদরাও প্রশ্ন করেন, সিনিয়ররা কেন ছুটিতে? কেনই বা এমারজেন্সি বিভাগ থেকেও রোগীদের ফেরানো হচ্ছে? আন্দোলনকারীরাও পালটা নিজেদের বক্তব্য রাখেন। এও স্পষ্ট করে দেন, কলেজের অধ্যক্ষ ইস্তফা না দেওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবেই। বিধায়করা তাঁদের কার্যত অনুরোধ, উপরোধ করে কাজে ফেরার অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। অধ্যক্ষ ইস্তফা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে অনড় থাকবেন হলে জানিয়েছেন তাঁরা।
কাশীপুর-বেলগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, ”সরকারি হাসপাতালের এই পরিস্থিতিতে আমরা চিন্তিত। গোটা কলকাতায় আর জি করের নামে এরকম একটা ধারণা হয়ে গিয়েছে যে এখন এই হাসপাতালে এলে চিকিৎসা মিলছে না। সেটা খুব একটা ভাল বিষয় না। আমরা কথা বলেছি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। তবে আমরা তো ডিসিশন মেকার নই। দেখা যাক, কী হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.