গোবিন্দ রায়: মামলার তথ্য ও নথি যাচাই না করেই অভিযুক্তকে সপাট জামিন! তা-ও নারী নিগ্রহের মতো গুরুতর অভিযোগের মামলায়! নিম্ন আদালতের এমনই নির্দেশনামা দেখে কলকাতা হাই কোর্ট তাজ্জব। এহেন অনৈতিক ও নিয়মবিরুদ্ধ কাণ্ডের শিকড় খুঁজতে তারা আলিপুর কোর্টের সংশ্লিষ্ট বিচারকের কাছে জবাব চাইল হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।
ন্যায়বিচারের ভার যাঁর উপর, খোদ তাঁকেই কারণ দর্শানোর ঘটনাটি ঘিরে স্বাভাবিক ভাবে চাঞ্চল্য দানা বেধেছে। অভিযোগ, আগে থেকে টাইপ করে রাখা জামিন-মামলার আদেশনামার শূন্যস্থানে স্রেফ নাম-ধাম বসিয়ে সই করে জামিনের রায় দিয়েছেন বিচারক। এতে বিস্ময় প্রকাশ করে সম্প্রতি আলিপুর আদালতের ওই অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে শো-কজ করেছে হাই কোর্ট। কেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে না, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরি। নির্দেশের প্রতিলিপি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মারফত তিনি জেলা জজকে পাঠিয়েও দিয়েছেন ।
এক তরুণীর শ্লীলতাহানি সংক্রান্ত মামলায় গত বছর অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আলিপুর আদালতের ওই অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। পরে নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। হাই কোর্টের শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলি অনসূয়া চৌধুরী দাবি করেন, যেভাবে নির্দেশটি দেওয়া হয়েছে, তা বিধিবহির্ভূত।
পাশাপাশি তরুণীর আইনজীবী অপলক বসুও নিম্ন আদালতের নির্দেশনামার কপি হাই কোর্টে পেশ করে জানান, সরকারি কৌঁসুলির কোনো বক্তব্য না শুনে, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছে। অভিযোগ, নাম-ধাম লেখার জন্য জায়গা ফাঁকা রেখে জামিনের রায়ের কাগজপত্র আগেই তৈরি করে রাখা রয়েছিল। কলম চালিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করে জামিন মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.