রমেন দাস: ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যু। মুর্শিদাবাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ! মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুমন নিহারের (Suman Nihar) মৃত্যুতে ঘনীভূত রহস্যও। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যমন্তক দাসের অস্বাভাবিক মৃত্যুতেও ওঠে প্রশ্ন।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) লালগোলার বালিপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে সুমন নিহারের দেহ। শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এদিকে সুমনের (Suman Nihar Jadavpur) সহকর্মীরাও অবাক এই মৃত্যুর খবরে। সূত্রের খবর, ওই শিক্ষক পারিবারিক অশান্তির জেরে অবসাদে ভুগতে পারেন। সূত্রের আরও দাবি, একটি মামলা সংক্রান্ত বিষয়েও চাপে ছিলেন অধ্যাপক। তাঁর মৃত্যুতে সেই কারণও থাকতে পারে। যদিও মৃত অধ্যাপকের পরিবার এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Mechanical Engineering) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অমিত কর্মকার ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল‘-কে জানান, ”সপ্তাহ দুয়েক আগে একটি বৈঠকে দেখা হয়েছিল সুমনের সঙ্গে। ফোনেও কথা হয়েছে নানা বিষয়ে। আচমকা এই ঘটনায় হতবাক আমরা। বিভাগে কখনও কোনও আঁচ অন্তত আমি পাইনি।” অধ্যাপকের মৃত্যুতে অবাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। তিনি বলেন, ”আমি শোকাহত। ভীষণ খারাপ লাগছে। এই ঘটনা কেন ঘটল বুঝতে পারছি না!” শোকের আবহ সুমন নিহারের ছাত্রদের মধ্যেও। তাঁদের দাবি, ”স্যর অনেকদিন ক্যাম্পাসে আসেননি। কিন্তু যোগাযোগ ছিল না এমন নয়। মাঝে মাঝেই মনমরা লাগত! বুঝতে পারছি না, কেন এমন করলেন!” প্রায় একই সুরে শোকপ্রকাশ করেছেন শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সম্পাদক অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, ”আমাদের সহকর্মীর মৃত্যুতে শোকাহত। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা নেই।” শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র তরফে অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল জানান, ”বিশ্বাস করতে পারছি না। মাসখানেক আগেও কথা হয়েছিল। সক্রিয় ছিল, ইদানিং খুব খুশি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ ওঁর পিছনে লেগেছিল একটা সময়ে। ক্যাম্পাসে ওঁকে মারা হয়। আবার ওঁর নামেই তদন্ত শুরু হয়! অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করত সুমন। অবাক হচ্ছি ওঁর এভাবে চলে যাওয়ার খবরে।”
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেও বিতর্কে জড়ান সুমন নিহার। ছাত্রীর ছবি তোলা সংক্রান্ত অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তখন সুমনের বিরুদ্ধে সরব হন কেউ কেউ। এই বিষয়ে পালটা যুক্তি দেন ওই অধ্যাপকও। ক্যাম্পাসে নেশার প্রতিবাদ করে এই অবস্থা হয়েছে তাঁর, দাবি করেন তিনি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুতে উঠে আসছে একাধিক তত্ত্ব। অধ্যাপকের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, সুমন নিহার কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে থাকতেও পারেন, তা নিয়ে সমস্যার জেরেও এই কাণ্ডের সম্ভাবনা রয়েছে বলেই দাবি। আবার মামলার প্রসঙ্গও তুলছেন কেউ কেউ। অধ্যাপকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আসল কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.