দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে হতে পারে অশান্তি। সেই আশঙ্কায় আপাতত স্থগিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান। তবে বার্ষিক সমাবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগামী সোমবার কোর্টের বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত দু’রকমের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। বিশেষ বা স্পেশ্যাল সমাবর্তন এবং বার্ষিক বা অ্যানুয়াল সমাবর্তন। বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মূলত ডি’লিট, সাম্মানিক ডক্টরেট প্রদান করা হয়।সম্মান প্রাপকদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল। পড়ুয়াদের শংসাপত্র দেওয়া হয় বার্ষিক সমাবর্তনে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে পড়ুয়াদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের উপস্থিতি মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না। আচার্যের হাত থেকে শংসাপত্র নেবেন না বলে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন পড়ুয়ারা। তবে তা সত্ত্বেও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আসলে তাঁকে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হবে বলেও দাবি পড়ুয়াদের।
আচার্য জগদীপ ধনকড় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে অশান্তির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। জরুরি ভিত্তিতে তাই শনিবার ইসি বা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়। ওই বৈঠকেই আপাতত বিশেষ সমাবর্তন বা স্পেশ্যাল কনভোকেশনের মতো অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, “বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের দাবি খতিয়ে দেখে আমরা বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত রাখছি। সোমবার কোর্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। বার্ষিক সমাবর্তন হবে কি না, সে বিষয়ে ওই বৈঠতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের সম্পর্ক ক্রমশই তলানিতে ঠেকেছে। আচার্যের ক্ষমতা খর্ব করতে রাজ্য বিধানসভায় বিলও আনা হয়েছে। তার ঠিক পরেরদিনই স্থগিত করে দেওয়া হয় হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। এবার স্থগিত হয়ে গেল যাদবপুরের মতো ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পড়ুয়াদের আচার্যের হাত থেকে শংসাপত্র নিতে না চাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূলের কলকাঠি। আচার্য যাতে কোনওভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে না পারেন তাই এত বিক্ষোভ।
সন্ধের পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেন, যাদবপুরে সমাবর্তন স্থগিত করার সিদ্ধান্তে তিনি স্তম্ভিত, মর্মাহত। সংকীর্ণ রাজনীতির স্বার্থে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা কলঙ্কিত হচ্ছে বলেও মনে করছেন রাজ্যপাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.