ছবি: ফাইল
স্টাফ রিপোর্টার: মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগের ঘটনা। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল পূর্ব ভারতের আঞ্চলিক স্বাস্থ্য-শিক্ষাকেন্দ্রের তকমা হারিয়েছে। সূত্রের খবর, এই ঘটনার নেপথ্যে স্বাস্থ্য দপ্তর ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মতপার্থক্য। কিন্তু রাজ্যের কোনও মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতাল নয়। ঐতিহ্যশালী তকমা কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালের বদলে দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে থাকা জোকা ইএসআই (Joka ESI) হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে মেডিক্যাল এডুকেশন সেন্টার গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়ে সোমবার চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দিল্লির এহেন সিদ্ধান্তে বিস্মিত স্বাস্থ্য প্রশাসন। স্বাস্থ্যকর্তাদের প্রশ্ন, কলকাতা বা রাজ্যের এমন একটি মেডিক্যাল কলেজ খুঁজে পাওয়া গেল না যেটি মেডিক্যাল এডুকেশন সেন্টারের শর্ত পূরণ করতে পারে?
পরপর দু’দফায় পরিদর্শনের পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জেএনএম-এর অধ্যক্ষকে চিঠি (লেটার অফ অ্যাকসেপটেন্স) বা সম্মতির চিঠি পাঠায় এনএমসি। তাতে বলা হয়েছিল প্রস্তাবিত মেডিক্যাল এডুকেশন ইউনিটের আহ্বায়ককে অন্তত চার বছর বদলানো যাবে না। কিন্তু পরিদর্শনের সময় এমইইউ-এর আহ্বায়ক ছিলেন অ্যানাস্থেশিয়ার অধ্যাপক ডা. ধ্রুব চক্রবর্তী। কিন্তু ঘটনা হল, আঞ্চলিক স্বাস্থ্য-শিক্ষা কেন্দ্রের তকমা পাওয়ার পরেই আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ধ্রুব চক্রবর্তীকে। সেই জায়গায় নিয়োগ করা হয় কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক ডা. সুমন রায়কে।
সূত্রের খবর, বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ এনএমসি কারণ জানতে চায় ১ মার্চ। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তার কোনও জবাব না মেলায় ১৩ মার্চ এনএমসি এই এমইইউ তকমাটি কেড়ে নেয় জেএনএম হাসপাতাল থেকে। স্বাভাবিকভাবেই এতে স্বাস্থ্য মহলে আলোড়ন পড়ে যায়। শিক্ষক-চিকিৎসকদের আক্ষেপ, মর্যাদা পেয়েও শুধুমাত্র রাজ্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাম্পাস কলেজটি এমইউ-এর মর্যাদা রাখতে পারলে রাজ্যের ২৩টি সরকারি এবং ৭টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসকদের আর ভিন রাজ্যে যেতে হত না বিভিন্ন সময়ে এনএমসি-র স্বাস্থ্য-শিক্ষা সংক্রান্ত নানা প্রশিক্ষণের জন্য।
এর মধ্যেই জল্পনা চলছিল, নতুন কোন কলেজের কপালে শিকে ছেঁড়ে। সোমবার রাতে স্পষ্ট হয়ে গেল, সেই সম্মানজনক সুযোগ পাচ্ছে জোকা ইএসআই হাসপাতাল। জোকার ওই স্নাতকোত্তর স্তরের মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জয় কেশকর বলেন, ‘‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের চিঠি আমরা পেয়েছি। এমন একটি মর্যাদার প্রস্তাব পেয়ে আমরা আনন্দিত। আমাদের সম্মতির কথা এনএমসি-কে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ গত শুক্রবরাই এনএমসি-র দুই পরিদর্শক তাঁদের হাসপাতালে এসেছিলেন সরেজমিনে সব কিছু খতিয়ে দেখতে।
সোমবার প্রস্তাবের চিঠি পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, এনএমসি-র আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের অধিকর্তা শম্ভুশরণ কুমারের তরফে লেখা চিঠিতে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী তিন বছর আহ্বায়কের মতো পদাধিকারীকে বদলানো যাবে না। শিক্ষক-চিকিৎসককে বদলাতে গেলেও অনুমতি বাধ্যতামূলক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.