অভিরূপ দাস: স্পুটনিক ভি’র পর জনসনের কোভিড টিকা (Corona vaccine) এডি২৬.কোভ২.এস। এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে পিয়ারলেস হাসপাতালে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য মাত্র ছ’টি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যেই একটি দক্ষিণ শহরতলির এই বেসরকারি হাসপাতাল। কোভিডের বাড়বাড়ন্তে এহেন খবরে আশার আলো বঙ্গে।
তৃতীয় পর্যায়ের এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর তথা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ ডা. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, মোট ১০০ জনের উপর এই টিকার ট্রায়াল হবে। ৩:১ নিয়ম মেনে তিনজন টিকা এবং একজন প্ল্যাসিবো পাবেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে টিকার অভাব প্রকট। স্বাভাবিকভাবেই এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবক হতে চেয়ে অনেকেই যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন পিয়ারলেসের ভ্যাকসিন গবেষণার প্রধান ডা. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক। এথিক্স কমিটির অনুমোদন এলেই শুরু হবে এই ট্রায়াল। সূত্রের খবর আগামী জুন মাস থেকেই হাসপাতালে এডি২৬.কোভ২.এস-এর ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে।
জনসন অ্যান্ড জনসনের (johnson and johnson corona vaccine) তৈরি এই করোনা টিকার বিশেষত্ব রয়েছে। অন্যান্য টিকার মতো দুটি ডোজ নয়, একটি ডোজেই কাজ করবে এই টিকা। ২০২০ সালের জুলাই মাসে প্রথমে একদল হনুমানের উপর এই প্রতিষেধক পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে জনসনের এই টিকা।
তারপরেই আমেরিকা সরকারের অনুমোদন পেয়ে ১ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর প্রাথমিক পর্যায়ে সেটির প্রয়োগ শুরু হয়েছিল। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসনের দাবি, একটিমাত্র টিকা প্রয়োগ করলেই দীর্ঘ সময়ের জন্য মানবদেহে করোনা ভাইরাস (Corona Virus) সংক্রমণ প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে উঠবে। ফল বলছে, আমেরিকায় ৭২ শতাংশ ক্ষেত্রে এই টিকা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। তবে বিশ্বের তিন মহাদেশে পরীক্ষায় টিকার সাফল্যের হার ৬০ শতাংশের কিছুটা বেশি।
ভারতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হওয়ার আগে আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় ৪৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের দেহে জনসনের টিকা প্রয়োগ করা হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকায় ৬৬ শতাংশ এবং আফ্রিকায় ৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রে এই টিকার কার্যকরিতা প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন। শুধুমাত্র কার্যকারিতা বেশি তাই নয়, জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও তুলনায় অনেক কম বলে তৃতীয় পরীক্ষার রিপোর্টের পর জানিয়েছে টিকা নির্মাতা সংস্থা। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন অক্সফোর্ড, ফাইজার বা মর্ডানার টিকার ‘সাফল্যের হার’ জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার তুলনায় কিছুটা বেশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.