ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ তৃণমূল কংগ্রেসের। ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে যোগ থেকে শুরু করে জৈন হাওয়ালা কাণ্ড নিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে রাজ্যের শাসকদল। এহেন সংঘাতের আবহে সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় দাবি করেন যে মৃত্যু হয়েছে জৈন হাওয়ালা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সুরেন্দ্র জৈনের।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দুশেখর বলেন, “২৮ জুন মৃত্যু হয়েছে সুরেন্দ্র জৈনের। হাওয়ালা কাণ্ডে অভিযোগ তোলার পরই মৃত্যু। প্যানিক অ্যাটাকে মৃত্যু না এটা কাকতালীয় ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হোক। রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্থ, অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। হাওয়ালা ডায়েরিতে নাম ছিল ধনকড়ের। কে তিনি? মহুয়া মৈত্র ধনকড়ের জমি কেলেঙ্কারি নিয়ে টুইট করেছিলেন। কেন চুপ ধনকড়? মানবাধিকার কমিশন ত্রিপুরা যাচ্ছে না কেন? সেখানে তো মহিলা ও শিশুরা অত্যাচারিত।” এছাড়া, প্রতারক দেবাঞ্জনের সঙ্গে কি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়েরও (Jagdeep Dhankhar) যোগ ছিল? একের পর এক ছবি দেখিয়ে সেই প্রশ্নই তুলে দিলেন তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) সুখেন্দুশেখর রায়। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে একাধিক ছবি প্রকাশ করেছেন সাংসদ। যেখানে দেখা গিয়েছে, দেবাঞ্জন দেবের দেহরক্ষী রাজভবনে রাজ্যপালের পরিবারের সঙ্গে ছবি তুলেছেন। এমনকী, দেহরক্ষীর হাত দিয়ে বিশেষ খাম রাজ্যপালের কাছে যেত বলেও অভিযোগ করেছেন তৃণমূল সাংসদ। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, “দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টে কয়েকটি সংস্থাকে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার খবর আমরা পেয়েছিলাম। হাওয়ালার মাধ্যমে সাংসদ ও বিধায়কদের হাতে টাকা এসেছিল।” এতে জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের জড়িত থাকার অভিযোগও তুলেছিলেন সুখেন্দু।
১৯৯১ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে তুঙ্গে পৌঁছয় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। জঙ্গিদের অত্যাচারে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। উত্তাল সেই সময়ে উপত্যকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে সেনাবাহিনী। জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে দেশজুড়ে একের পর এক অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। এমনই এক অভিযানে রাজধানী দিল্লি থেকে পুলিশের জালে পড়ে হিজবুল মুজহিদিনের সদস্য আশফাক হুসেন লোন। ওই জঙ্গিকে জেরা করে হতবাক হয়ে যান তদন্তকারীরা। প্রকাশ্যে আসে জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে হাওয়ালা যোগ। উঠে আসে জৈন ভাইদের নাম। তাঁরা হলেন–সুরেন্দ্র, বলবন্ত রাই, নরেন্দ্র এবং অরবিন্দ। ওই পরিবারই হাওয়ালার মাধ্যমে জঙ্গিদের অর্থের জোগান দিত। শুধু তাই নয়, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে একাধিক রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে। পরবর্তীকালে যা ‘জৈন হাওয়ালা’ মামলা হিসেবে দেশজুড়ে শোরগোল ফেলে দেয়।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.