Advertisement
Advertisement
জয় শ্রীরাম

‘জয় শ্রীরাম স্লোগান তুলে মারধর বাংলার সংস্কৃতি নয়’, মন্তব্য অমর্ত্য সেনের

'জয় শ্রীরাম' ও 'জয় বাংলা'- র মাঝে মা দুর্গাতে ভরসা রাখছেন নোবেলজয়ী।

'Jai Sri Ram' Used to 'Beat up People', Not Associated with Bengal Culture.
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:July 6, 2019 9:25 am
  • Updated:July 6, 2019 9:26 am  

স্টাফ রিপোর্টার: একদিকে ‘জয় শ্রীরাম‘ অন্যদিকে ‘জয় বাংলা‘। এমন দুই স্লোগানে যখন আড়াআড়ি বিভক্ত বাংলার রাজনীতি। দশভুজায় আস্থা রাখলেন নোবেলজয়ী। সপ্তাহান্তের সন্ধেয় নিজের পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখে জানালেন, “জয় শ্রীরাম যে খুব প্রাচীন বাঙালি বক্তব্য, এমনটা তো শুনিনি। বরং আমার মনে হয় এই শব্দ ইদানীংকালের আমদানি।” প্রেসিডেন্সির স্বর্ণযুগের অর্থনীতির ছাত্র জানিয়েছেন, “এখন শুনছি বাংলায় রামনবমী খুব হচ্ছে। আগে এত হত বলে শুনিনি। সেদিন আমার চার বছরের নাতনিকে জিজ্ঞাসা করলাম টিভিতে যা দেখো তোমার সবচেয়ে কাকে ভাল লাগে? ও বলল, মা দুগ্গা। ঠিকই বলেছে এই বাংলায় মা দুর্গার যা প্রতিপত্তি তার সঙ্গে রামনবমীর তুলনা চলে না।”

[আরও পড়ুন- হাই কোর্টের নির্দেশ, তৈরি হচ্ছে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের ইন্টারভিউ তালিকা]

রাজনীতিতে ভগবানের নাম নিয়ে স্লোগানের লড়াই দেখে তিনি যে কার্যত বিরক্ত তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন ঠারেঠোরে। বিশেষ রাজনৈতিক দলের জয় শ্রীরাম স্লোগান সম্বন্ধে তাঁর মত, “ওই শব্দ ঠিক কোন জায়গায় পড়ে জানি না। তবে বর্তমান সময়ে এর ব্যবহার দেখে মনে হয় লোককে প্রহার করতে গেলেই এই শব্দ ব্যবহার করতে হচ্ছে।” রাজ্যে বিশেষ কিছু পুজো বাড়বাড়ন্ত নিয়েও বিরক্ত প্রকাশ করে বলেছেন, “কেউ আবার হনুমান নিয়ে উৎসাহিত। কিন্তু, অনেক দুষ্টুমি করলেও বলা হয় তুমি একটি হনুমান। এটা তো খুব প্রশংসিত শব্দ বলে মনে হয় না। আগেকার দিনে যাত্রাপালায় হনুমান লেজে আগুন লাগিয়ে লাফালাফি করত। হনুমান বিষয়টি যাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাই ভাল।”

Advertisement

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা শুক্রবার পা রেখেছিলেন পুরনো শিক্ষাঙ্গনে। গান্ধী ভবনে ‘হাউস ফুল’ অডিটোরিয়ামে যখন অমর্ত্য সেন প্রবেশ করছেন চতুর্দিক থেকে জয়ধ্বনি উঠল তাঁর নামে। শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীরাই নন, এদিন বিশ্ববন্দিত অর্থনীতিবিদের বক্তব্য শুনতে দর্শকাসনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সুগত বসু, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কিউরেটর জয়ন্ত সেনগুপ্ত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র প্রমুখ।

[আরও পড়ুন- ‘লড়াই চালিয়ে যান’, বাঁকুড়ার দলীয় নেতৃত্বকে ঘুরে দাঁড়ানোর টনিক মমতার]

স্বাধীনতা পরবর্তী কলকাতায় তাঁর স্মৃতিচারণ। এই ছিল মূল আলোচনার বিষয়বস্তু। স্বাভাবিকভাবেই অতীতের দিনযাপনের পাশাপাশি বর্তমান সময়ের বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এ শহর কি পিছিয়ে পড়ছে? নিজের পুরনো শহর প্রসঙ্গে তাঁর অভিমত, “যদি এই শহরে শুধুমাত্র একটি বিশেষ ধর্মাচারণ করার জন্য কিছু মানুষকে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়, তবে সেটাই পিছিয়ে পড়ার জন্য যথেষ্ট।” বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও জায়গা করে নিয়েছিল তাঁর গল্পে।

ছাত্রজীবনে তিনি যে বাম-ঘেঁষা মনোভাবের ছিলেন শুক্রবার সেকথা জানান অমর্ত্য। তবে বাম মনোভাবাপন্ন হলেও কখনও যে তিনি সক্রিয় রাজনীতি করেননি তাও স্বীকার করেছেন দরাজ গলায়। বলেছেন তাঁর সুহৃদ রণজিৎ গুহর কথা, বামপন্থী রণজিৎ কীভাবে বিশ্বাস হারিয়েছেন মার্ক্সসিজম থেকে। শিল্পক্ষেত্রে রাজ্যের অবনমনের জন্যও পরোক্ষে বামেদেরই দায়ী করেছেন অমর্ত্য সেন। যদিও আদ্যোপান্ত বামপন্থী ঘরানার মানুষটি নিজেই চুপিসাড়ে কাজ করে গিয়েছেন মানুষের জন্য। এদিনও অমর্ত্য সেন জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু-মুসলিমরা মিলেমিশে বাস করেন এবং এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। তাঁর কথায়, “বাংলার বেশিরভাগ মুসলিমই আদতে রূপান্তরিত মুসলিম। ওনারাই প্রথম এদেশে এসে বাজার স্থাপন করেন। মধ্য এশিয়া থেকেই মূলত এই বাজারের ভাবনা এসেছিল।”

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement