অর্ণব আইচ: বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় দুই বিদেশি নাগরিক মারা গিয়েছিলেন। আরসালান পারভেজ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে জানা যায়, আসল অপরাধী তার দাদা রাঘিব পারভেজ। তার মামা মহম্মদ হামজাকেও পাকড়াও করে পুলিশ। তদন্তে নেমে লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে নতুন তথ্য এসেছে। ঘটনার পর রাঘিব তার মামার সাহায্যে নিউটাউনে এক পিসির বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানেই সে রক্তমাখা জামা ও জুতো বদলায়। পিসির বাড়ি থেকেই দুবাই পালিয়েছিল রাঘিব। বুধবার রাঘিবকে সঙ্গে নিয়ে সেই পিসির বাড়িতে যান গোয়েন্দারা। রক্তমাখা জামা ও জুতো উদ্ধার হয়েছে।
রাঘিবের মেডিক্যাল টেস্টে বেশ কয়েকটি ‘সিলিকন বাইট’ পাওয়া গিয়েছে। এয়ার ব্যাগের অভিঘাতেই ওই আঘাতের চিহ্ন। রাঘিবই যে গাড়ি চালাচ্ছিল তা নিয়ে নিশ্চিত পুলিশ। জাগুয়ার কাণ্ডের মোড় ঘুরে যায় গত সপ্তাহে। মূল অভিযুক্ত আরসালান পারভেজের নাম সরিয়ে উঠে আসে তার দাদা রাঘিব পারভেজের নাম। আরসালান ঘটনাস্থলের ধারেকাছে ছিল না। দুবাই থেকে ফিরিয়ে এনে রাঘিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বেপরোয়া গতিতে মার্সেডিজ বেনজকে ধাক্কা মেরে পুলিশ কিয়স্কে দাঁড়ানো দুই বাংলাদেশির মৃত্যু ঘটানোর পর রাঘিব গাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দেয়।
পরদিন বিকেলে মামার মদতে নিউটাউনে পিসির বাড়ি থেকে সে পাড়ি দেয় দুবাইয়ে। পরিবারের পরামর্শে আরসালানকে বলির পাঁঠা করা হয়।
কিন্তু পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা গোড়া থেকেই সংশয়ে ছিলেন। আরসালানকে গ্রেপ্তার করার পরও তাঁরা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না, গাড়ি সে-ই চালাচ্ছিল কি না।
লাগাতার জেরার মুখে এডিনবরার ডিগ্রিধারী শিক্ষিত যুবকটি গ্রেপ্তারির দু’দিন বাদে ভেঙে পড়ে। জানিয়ে দেয়, সেই রাতে সে আদৌ গাড়িতে ছিল না। আরসালানের বাবা তথা নামজাদা রেস্তরাঁ চেনের কর্ণধার আখতার পারভেজকে ইতিমধ্যে লালবাজারে তলব করে জেরা করেছেন গোয়েন্দাকর্তারা। অকাট্য তথ্যপ্রমাণের সামনে বসে তিনি স্বীকার করেন সত্যিটা কী। জানান, বড় ছেলেকে বাঁচাতে পরিবারের সবাই মিলে ছোটকেই এগিয়ে দিয়েছিলেন। রাঘিব অবশ্য দেশে ফিরেও সরাসরি আত্মসমর্পণ করেনি। দুর্ঘটনায় হাতে লাগা চোট সারাতে বেনিয়াপুকুরের একটি নার্সিংহোমে ভরতি হয়েছিল। গত সপ্তাহে দুপুরে পুলিশ সেখান থেকেই তাকে তুলে আনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.