সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের চিঠি আদানপ্রদান মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের মধ্যে। তবে এবারের চিঠির বিষয় সংঘাত নয়। বরং সাংবিধানিক প্রধান এবং প্রশাসনিক প্রধানের মধ্যে ঠিকঠাক সমন্বয় রয়েছে, সেটাই প্রকাশ পেল অন্তত রাজ্যপালের টুইটে। রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতির অবাঞ্ছিত প্রবেশ নিয়ে আলোচনার জন্য সময় চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন জগদীপ ধনকড়। পরেরদিনই নবান্ন থেকে তিনি চিঠির উত্তর পেয়েছেন।তাই টুইট করে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করতে ভুললেন না রাজ্যপাল। বোঝালেন, শুধু সংঘাতই নয়, বন্ধুত্বের পরিবেশ বজায় রাখতেও তিনি যথেষ্টই আগ্রহী।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন নিয়ে যে নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবছর, যেভাবে পড়ুয়াদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে আচার্য তথা রাজ্যপালকে, তা মোটেই ভালভাবে গ্রহণ করতে পারেননি জগদীপ ধনকড়। এর দায় তিনি পরোক্ষে রাজ্য সরকারের উপরেই চাপিয়েছেন। এসব ঘটনাকে শিক্ষার ডিএনএ-তে রাজনীতির প্রবেশ বলেও উল্লেখ করেছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যে সুস্থ শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সরকারের সঙ্গে তিনি আলোচনা চাইছিলেন।
সূত্রের খবর, সেই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে ২৫ তারিখ চিঠি লেখেন ধনকড়। আলোচনার জন্য সময় ঠিক করার প্রস্তাব ছিল চিঠিতে। পরেরদিন অর্থাৎ ২৬ তারিখই নবান্ন থেকে রাজভবনে পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর পালটা একটি চিঠি। যার বক্তব্য, রাজ্যপালের চিঠিটি তিনি শিক্ষাদপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তা পড়ে সময় করে রাজ্যপালের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে নেবেন। এই চিঠিপ্রাপ্তিতে বেশ খুশি হয়েছেন জগদীপ ধনকড়। অন্তত টুইটারে তিনি তেমন বহিঃপ্রকাশই ঘটিয়েছেন।
Efforts to ensure improvement in education scenario seem to be bearing results. To my communication of December 25, CM has responded on Dec 26 that Minister-in-Charge Education will discuss all the issues. I look forward to this. In democracy we have to move in togetherness. pic.twitter.com/MugTFUS1Vm
— Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) December 28, 2019
জগদীপ ধনকড় এ রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সেভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। বরং কখনও সংঘাতই তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। মাঝে কালীপুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে সস্ত্রীক আতিথ্য গ্রহণের পরও বরফ তেমন গলেনি। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় তা আরও বেড়েছে। এমনকী চিঠি আদানপ্রদান নিয়েও কম তিক্ততা তৈরি হয়নি নবান্ন-রাজভবনের। কিন্তু বড়দিনের এই পত্র এবং প্রত্যুত্তর সেই সংঘাতের আবহ থেকে কিছুটা বেরিয়ে এল বলেই মনে করা হচ্ছে। আবার রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, নবান্ন থেকে প্রাপ্ত চিঠির কথা টুইটারে লিখে রাজ্যপালও বোঝাতে চাইলেন, তিনি শুধু সমালোচনাই করেন না। ভাল কাজের প্রশংসাতেও তিনি উদার।
তবে সরকারি স্তরে কথাবার্তা রাজ্যপাল যে এভাবে টুইট করে প্রকাশ্যে এনেছেন, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বিষয়টি যথেষ্ট গোপনীয়। প্রকাশ না করাই উচিত ছিল। এরপর তিনি গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করে জানান যে, কবে তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে এই সংক্রান্ত আলোচনায় বসবেন, তা ঠিক করেননি এখনও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.