Advertisement
Advertisement

Breaking News

জগদীপ ধনকড়

‘মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহারে স্তম্ভিত’, সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে ফের বিস্ফোরক রাজ্যপাল

'লাটসাহেবের মতো আচরণ করছেন', পালটা রাজ্যপালকে জবাব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।

Jagdeep Dhankar tweets, he hurts on Mamata Banerjee's behaviour
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 27, 2019 3:40 pm
  • Updated:November 27, 2019 5:29 pm  

রাহুল চক্রবর্তী: নবান্নের সঙ্গে সংঘাতের পরিধি আরও বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বিধানসভায় সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলেও কথা না বলা এবং সৌজন্য না দেখানো নিয়ে বুধবার সকালে টুইটারে নতুন করে সাফাই দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। যেখানে উল্লেখ করেছেন, সৌজন্য দেখাতে তিনি কার্পণ্য করেননি। যদিও রাজ্যপালের এই মন্তব্যকে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না রাজ্যের শাসক দল। ধনকড়ের এই সাফাইকে কার্যত সত্যের অপলাপ বলে মনে করছে তৃণমূল শিবির। ঘটনার সময় উপস্থিত তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব এবং প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা এদিন রাজ্যপালের দাবিকে প্রকৃত তথ্যের বিরোধী বলে মনে করছেন। রাজ্যপালের এদিনের টুইট নিয়ে বিধানসভায় সংবিধান নিয়ে আলোচনায় মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জবাব দেবেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এছাড়াও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালকে পালটা জবাব দেন।

মঙ্গলবার বিধানসভায় সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যপাল। বি আর আম্বেদকরের মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। সেই সময় তাঁর পাশেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর দিকে একটি বারও তাকাননি রাজ্যপাল। বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে গিয়ে বক্তব্য রাখেন রাজ্যপাল। সেসময়ও অধিবেশন কক্ষেই হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী প্রোটোকল মেনে যাওয়ার সময় রাজ্যপালকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়েও দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আধ ঘণ্টা রাজ্যপাল বিধানসভায় থাকলেও একটিবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁকে কথা বলতে দেখা যায়নি। তিনি সাংবিধানিক প্রধান হলেও, তাঁকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে, এমন অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। পরে বক্তব্য রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টত জানিয়ে দেন, রাজ্যে নির্বাচিত সরকার। কিন্তু রাজ্যপাল পদটি মনোনীত।

Advertisement

[আরও পড়ুন: টাকা আটকে দিতে পারে মহারাষ্ট্রের নতুন জোট সরকার, সংকটে বুলেট ট্রেন প্রকল্প!]

সংঘাতের এই আবহ বুধবার সকালে ফের একধাপ বৃদ্ধি পায়। বিধানসভায় সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে এদিন সকালেই টুইট করেন রাজ্যপাল। যেখানে তিনি লিখেছেন, “আমি সৌজন্য দেখাতে কার্পণ্য করিনি। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা। আশ্চর্যভাবে তিনি আশানুরূপ ব্যবহার করেননি। আমি স্তম্ভিত।” মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সৌজন্য দেখাননি, কিন্তু বিধানসভার অন্যান্য বিধায়করা তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে, এমনটাও জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি টুইটে লিখেছেন, “অমিত মিত্র, পার্থ, আবদুল মান্নান-সহ সব বিধায়করা আমায় অভ্যর্থনা জানান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপ ঠিক ছিল না।”

পাশাপাশি সরকারি কর্মচারীদের প্রতি বার্তাও দিয়েছেন রাজ্যপাল। টুইটে লিখেছেন, সরকারি কর্মচারিরা আইন ও সংবিধানের খাঁচায় বন্দি মাত্র। সংবিধান ও আইনের বাইরে গিয়ে তাঁদের কাজ করা উচিত নয়।

৩৭০ ধারা রদ নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রশংসাও করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।

সংবিধান দিবসের শেষ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলের পরিষদীয় মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সংবিধানের ৭০ বছর পূর্তিতে রাজ্যপালের পদের কি কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে? রাজভবনের খরচ প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেভাবে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে রাজ্যপাল পদটিকে তুলে দেওয়া হোক। লাটসাহেবের মতো আচরণ করছেন রাজ্যপাল। নির্বাচিত সরকার রয়েছে বাংলায়। সরকার যথেষ্ট জনপ্রিয়। তা সত্ত্বেও সেই সরকারের কার্যকলাপে কেউ হস্তক্ষেপ করবে তা মেনে নেওয়া যায় না। ”  প্রায় একইভাবে সুর চড়ান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারকে রাজ্যপাল যেভাবে আক্রমণ করছে তা অনুচিত। তাঁর পদটিকে ব্যক্তিগত হিসাবে ব্যবহার করছেন রাজ্যপাল। মীরা কুমার, এম কে নারায়ণন, এস ওয়াই কুড়েশি-সহ বিশিষ্ট মানুষরা রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে গেলেন, আর রাজ্যপাল কেন উলটো কথা বলছেন?”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement