প্রতীকী ছবি।
রমেন দাস: পথ দেখায় যাদবপুর? একটি মৃত্যু আর একাধিক প্রশ্নের আবহে বারবার উঠে আসছে একথাও। একাধিক নির্যাতন আর ‘কালো সত্যে’র ধামাচাপা নিয়েও বিদ্ধ হচ্ছে রাজ্যের অন্যতম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।কিন্তু এখানেই উঠছে প্রশ্ন। প্রত্যেক মুহূর্তে খবরে হিল্লোল তোলা যাদবপুর ভোলার পর? আসলে এই মৃত্যু, মেধাবীর স্বপ্ন শেষের পরে? সব ভুলে যাওয়ার পরে বদলাবে বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) ? পড়াশোনার অট্টালিকায় ফের মাথাচাড়া দেবে না তো অভিযোগ? এখানেই উঠে আসছে যাদবপুরের পাওয়া না পাওয়ার প্রশ্ন। কেন?
ছাত্রের মৃত্যু (Jadavpur University Student Death) হয়েছে। বেরিয়ে এসেছে র্যাগিং এবং হস্টেল (Main Hostel) নির্যাতনের কঙ্কালসার চেহারা! বিদ্ধ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপর? নিরাপত্তা, সিসিটিভি, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে সরব হয়েছেন বহু। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ আবার এড়িয়ে গিয়েছেন সন্তর্পণে।
যাদবপুরের পাওয়া, বদলে যাওয়া নিয়ে যে রেজিস্ট্রার অভিযুক্ত হয়েছেন বারবার। সেই স্নেহমঞ্জু বসু (Snehamanju Basu) পদক্ষেপের কথা বলেছেন অবশেষে। কী কী? রেজিস্ট্রারের দাবি অনুযায়ী, এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও যাতে বাড়ানো যায়, এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানকে ওই দায়িত্বে নিয়োজিত করার।
তিনি বলছেন, ”নবাগত অর্থাৎ প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হোস্টেলের ব্যবস্থা করার কথা ভাবা হচ্ছে। নতুন জায়গায় রেখে তাঁদের মানসিক সাহস বাড়ানোর কথাও ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয়।” স্নেহমঞ্জু দেবীর দাবি, ”ছুটিতে ছিলাম। এমন ঘটনার কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি। কিন্তু এমন যাতে আর কখনও না হয়, এর জন্য সতর্ক থাকতে হবে আরও।”
একাধিক পদক্ষেপের কথা বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে যিনি, সেই তিনিই। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠেছে একাধিক। এখন যে প্রস্তাব বা ভাবনার কথা বলা হচ্ছে, আগে হয়নি কেন? প্রশ্ন তুলেছেন খোদ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী। তিনি বলছেন, ”যেখানে প্রয়োজন সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরার বন্দোবস্ত, বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধে কেন আগেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি?”
তাঁর কথায়, ”সবকিছুতে ঘেরাও বিক্ষোভ করেন ছাত্ররা, একথা বলে আসলে দায় ঝেড়ে ফেলার কৌশল। আসলে যাদবপুর শিক্ষায় সেরা। তার কৃতিত্ব সেখানেই অপরিসীম।” র্যাগিং অভিযোগ মেনে নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন ‘জুটা’র (JUTA) অন্যতম এই সদস্য। ”দায় তো সবার। আমরা এড়িয়ে যাই কীভাবে?” একই প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বাংলা বিভাগের প্রধান জয়দীপ ঘোষও।
এখানেই একাধিক প্রশ্ন আর বিতর্কের মধ্যেই ‘যাদবপুর বদলে’র প্রসঙ্গ উঠছে ফের। ক্যাম্পাস জুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধ করা। নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া। হস্টেলে নিরাপত্তা বাড়ানো। নতুনদের আলাদা হস্চেলের ব্যবস্থা। বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা তুলে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ একাধিক বিক্ষোভের অন্দরে যে কাজ বারবার বাধা পেয়েছে, তা-ও কি একটি মৃত্যুতে মাথাচাড়া দেবে অবশেষে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.