ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University) ও হস্টেল অনাচারে ভর্তি। বহু পরিস্থিতিই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বৃহস্পতিবার লালবাজারে বসে পুলিশকর্তাদের (Kolkata Police) জিজ্ঞাসাবাদের মুখে এই দাবি করেন যাদবপুরের ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’ রজত রায়। তিনি স্পষ্টই লালবাজারের কর্তাদের জানান, যাদবপুরে নিয়মের বেড়াজাল বসিয়ে শান্তি বজায় রাখা খুবই কঠিন। রাজনৈতিক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। আবার পুলিশের প্রশ্ন, রাতে এক ছাত্রের ফোন পাওয়া সত্ত্বেও কেন ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’ নিজে হস্টেলে না গিয়ে সুপারকে খোঁজ নিতে বলেন? হস্টেলে কেন বেআইনিভাবে থাকে ছাত্ররা? সিসিটিভি নেই কেন? র্যাগিং ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
এই ধরনের বহু প্রশ্নের উত্তর পেতে এবার যাদবপুরের ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’কে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। অনেক প্রশ্নের উত্তরেই ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’ রজত রায় উল্লেখ করেছেন হস্টেল সুপারের নাম। তাই তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে ফের হস্টেলের সুপারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। বুধবারই যাদবপুরের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সঙ্গে ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’কে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু রেজিস্ট্রার লালবাজারের পুলিশকর্তাদের জানান যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’ রজত রায়। সেই কারণে বৃহস্পতিবার ফের তাঁকে লালবাজারে তলব করা হয়। এদিন বিকেলে তিনি উপস্থিত হন লালবাজারে। তাঁর সামনে তুলে ধরা হয় দু’পাতার প্রশ্নমালা। তাতে ছিল ২৭টি প্রশ্ন।
বুধবার বেশ কিছু প্রশ্ন রেজিস্ট্রারকে করা হয়েছিল, যার উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এর উত্তরগুলি ‘ডিন’ই জানেন। তিনি ‘ডিন’-এর কাছ থেকে উত্তরগুলি জেনে লিখিতভাবে যাদবপুর থানায় জমা দেবেন বলে জানান। এদিন ফের ডিনকে প্রশ্ন করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও হস্টেলে তাঁর ভূমিকা কী? অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির কী ভূমিকা? র্যাগিং ঠেকাতে কোনও হেল্পলাইন চালু রয়েছে কি? উত্তরে রজতবাবু পুলিশকে জানান, কমিটির কিছু সমস্যা রয়েছে। তা তাঁরা শুধরে নেবেন। এর পর তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, রাত ১০টা ৫ মিনিটে কার ফোন এসেছিল? রজতবাবু পুলিশকে জানান, তাঁকে এক ছাত্র ফোন করে বলে, এক নতুন ছাত্রর রাজনীতিকরণ চলছে। তিনি যেন ব্যবস্থা নেন। ‘ডিন’ তখন নৈশভোজন করছিলেন।
যদিও তার তিন মিনিটের মধ্যে তিনি হস্টেল সুপারকে ফোন করে যে বিষয়টি দেখতে বলেন, তা তিনি প্রথমে জানাতে চাননি। পরে এক পুলিশকর্তা বিষয়টি ফোন করে জানতে পারেন। পরে রাত ১২টা ৮ মিনিটে সুপার তাঁকে ফোন করে জানান যে, এক ছাত্র নিচে পড়ে গিয়েছে। কিন্তু হস্টেলের ছাত্ররা ঘিরে রয়েছে বলে তিনি যেতে পারছেন না। হস্টেলের সুপার আগেই পুলিশকে জানান, চাকরিতে এখনও তিনি অস্থায়ী। তিনি আক্রান্ত হওয়ার ভয়েই সেখানে যাননি। পুলিশের কাছে ‘ডিন’ জানান, ২০০১ সালে তিনি যোগ দেন। ২০০৬ সালে স্থায়ী হন। কেন হস্টেলে প্রথম বর্ষের প্রায় দশজন ও কুড়িজন প্রাক্তনী থাকেন এবং বহিরাগতরা ইচ্ছামতো হস্টেলে যাতায়াতের ব্যাপারে কেন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেই প্রশ্ন তোলা হয়। ‘ডিন’ দু’দিন পর প্রশ্নের উত্তরগুলি লিখিতভাবে জানাবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.