অভিরূপ দাস: বহুকালের পুরনো ঝিল। এখন জল খুঁজে পাওয়া যায় না। পুরভোটের প্রাক্কালে সে ঝিল নিয়েই ক্ষুব্ধ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যে বা যারা ঝিল বোজানোর চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে এফআইআর করার নিদান দিয়েছেন তিনি।
পেল্লায় জলাভূমি নাকি এখন দুর্গন্ধের আঁতুড়ঘর। এমন অভিযোগ পেয়েই খোঁজখবর করতে শুরু করেছেন মহানাগরিক। পুরসভায় বসেই আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছেন, যারা ঝিল বোজাচ্ছেন অবিলম্বে তাঁদেরকে মিউনিসিপ্যাল কোর্টের নোটিস পাঠান। কোনওভাবেই জলাজমি বোজানো চলবে না। যাদবপুর থেকে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে বিক্রমগড়। সেখানেই দিগন্ত বিস্তৃত ঝিল। যদিও এখন দেখে তাকে চেনার উপায় নেই। মেয়রের দপ্তরে এসেছে এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস সেনগুপ্তর অভিযোগ। বিক্রমগড় ঝিলে জল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সমগ্র ঝিলটা এখন বিশাল একটা নোংরার ভ্যাট। বারবার কাউন্সিলরকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। অভিযোগ নতুন নয়। রবীন্দ্র সরোবরের পরেই দক্ষিণ কলকাতার দ্বিতীয় ফুসফুস বলা হয় এই বিক্রমগড় ঝিলকে। পুরসভার ম্যাপ অনুযায়ী, এই ঝিলের আয়তন ছিল ১৪ বিঘা। কমতে কমতে এখন তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ বিঘায়। তাও জলের দেখা নেই। যেদিকে চোখ যায় রাবিশ আর ময়লার প্লাস্টিক।
দশ নম্বর বরোর অর্ন্তগত এই ঝিলটি। ঝিল নোংরা করার জন্য সাউথ সিটির বাসিন্দাদের দিকেই আঙুল তুলেছেন বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঝিল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ঝিলের সংস্কারে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। তবু কীভাবে ময়লায় ঢাকা পড়ছে ঝিল? তপনবাবুর দাবি, পাশেই সাউথ সিটি। বহুতল থেকে রাতের অন্ধকারে কেউ যদি ময়লা ছুঁড়ে ফেলে তাঁকে কীভাবে আটকাব। যদিও মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এক দুজন ময়লা ফেলে এত বড় ঝিল ভরাট করে ফেলছেন এমন অভিযোগ সত্যি নয়। নিশ্চয়ই প্রচুর পরিমাণে আবজর্না ঝিলে ফেলা হচ্ছে।
মেয়রের এ অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূলের বরো চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, বাম আমলেই এই ঝিল বোজানোর কাজ শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের আমলেই তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। যদিও বাস্তবচিত্র বলছে এই আমলেও ঝিলের অবস্থা তথৈবচ। পাঁচ বছর অন্তর পুরভোট আসার সময় ঝিল সংস্কারের আশ্বাস দেয় বাম-ডান দু’পক্ষ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ফের আরেকটা পুরভোটের আগে ঝিলের চেহারা ফেরে কি না সেদিকেই তাকিয়ে এলাকার বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.