ফাইল ছবি
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ঘটনা ১: বেসরকারি হাসপাতাল বলছে, দম্পতি সন্তানের স্বাদ পাবে না। আইভিএফ (ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) করেও তেমন লাভ নেই। হতাশ দম্পতি হাজির এসএসকেএম হাসপাতালের ফার্টিলিটি সেন্টারে। মাত্র তিনটি পরীক্ষা। ওষুধের বদল। কয়েকমাস পর হাসিখুশি দম্পতি হাজির। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।
ঘটনা ২: বেসরকারি হাসপাতাল বলেছিল, জন্মগত ওজনের সমস্যা। ডাক্তারি পরিভাষায়, ওবেসিটি। নিত্য অশান্তি সংসারে। শেষ পর্যন্ত মানসিকভাবে বিধ্বস্ত দম্পতি হাজির পিজি হাসপাতালের সেন্টার অফ এক্সেলেন্স ইনফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ (IVF) সেন্টারে। কয়েকটি ওষুধ বদলে জীবনচর্যা একটু বদলে দিতেই। সংসারে হাসি। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।
গত ছ’মাসে পিজি হাসপাতালের (SSKM Hospital) আইভিএফ উৎকর্ষ কেন্দ্রে এমন অগুনতি ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন ডা. সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার ও তাঁর ছয় সহকর্মী। অন্তত ১৫০ জন দম্পতি কৃত্রিম উপায়ে গর্ভধারণের জন্য তৈরি। নভেম্বর থেকেই আইভিএফ শুরু হবে। ডা. সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারের কথায়, “কয়েকদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য ভবনে একদফা আলোচনা হবে। এই ক’মাসে যাঁদের চিকিৎসা হয়েছে, তাঁদের বিশদ তথ্য রিপোর্ট আকারে তুলে দেওয়া হবে।” সুদর্শনবাবুর কথায়, নভেম্বর থেকে আইভিএফ চালু হবে। দেশে প্রথম সরকারি উদ্যোগে এমন কৃত্রিম প্রজনন পিজি হাসপাতালে শুরু হয়েছে।
পিজি হাসপাতালের আইভিএফ সেন্টারের বিশেষজ্ঞদের অভিমত, শুধুমাত্র প্রজনন সমস্যার জন্য সন্তানধারণ বিলম্ব হয়-এমনটা সব সময় ঠিক নয়। হয়তো কারও ওজন খুব বেশি। অথবা মহিলা জানতেনই না তাঁর ডায়াবেটিস বা রক্তচাপের সমস্যা আছে। এই ধরনের সমস্যা থাকলে সন্তানধারণে সমস্যা হতেই পারে। তাই কোনও রোগী উৎকর্ষ কেন্দ্রে এলে সম্ভাব্য সব রক্ত পরীক্ষা ও হরমোন টেস্ট করা হয়। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে এইসব পরীক্ষা করানোর পর বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞরা মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্পূর্ণ নিখরচায় এই চিকিৎসা ইতিমধ্যে ভিন রাজ্যের রোগীদের কাছেও ভরসার জায়গা হয়েছে।
কারা আসেন এখানে চিকিৎসা করাতে? তথ্য বলছে, বেশিরভাগ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। যাঁদের বেসরকারি কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। আবার টাকা খরচ করেও কার্যত হতাশ উচ্চবিত্ত পরিবারের দম্পতিও আসেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.