ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতায় বসে যুবকদের আইএস জঙ্গি তৈরির চেষ্টা। বাংলাদেশের আইএস জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ করার জন্য মগজধোলাই। বিহার থেকে গ্রেপ্তার হওয়া দুই জঙ্গির কলকাতা যোগ মিলল। এমনকী, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গি নেতা বোমারু মিজান ওরফে কওসরের সঙ্গে যোগাযোগের সম্ভাবনাও গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তাই দুই জঙ্গিকে জেরা করতে এবার পাটনায় যাচ্ছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
পুলিশ জানিয়েছে, খইরুল মণ্ডল ও আবু সুলতান নামে এই দুই জঙ্গি আইএস বাংলাদেশের সক্রিয় সদস্য। একই সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে। বিহারের গোয়েন্দাদের হাতে এই দুই জঙ্গি ধরা পড়েছে পাটনা স্টেশনের কাছ থেকে। তাদের কাছ থেকে পুলওয়ামায় সিআরপিএফের উপর হামলার পরবর্তী সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও মিলেছে। ফলে ফের আইএস বাংলাদেশ জঙ্গিরা জম্মু ও কাশ্মীরের কোথাও ফের কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর হামলার চেষ্টা করছে, এমন সম্ভাবনা গোয়েন্দারা উড়িয়েও দিচ্ছেন না। তার উপর কলকাতা-সহ এই রাজ্যে তাদের কার্যকলাপের প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই এই দুই জঙ্গিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন এসটিএফ আধিকারিকরা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, খইরুল ও আবু নামে এই দুই জঙ্গিই বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানা এলাকার চাঁপাতলা গ্রামের বাসিন্দা। চোরাপথে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় আসে তারা। কলকাতাকে ভিত্তি করে প্রায়ই তারা যাতায়াত করত পাটনা, গয়া, দিল্লিতে। কখনও ট্রেনে। আবার কখনও বাবুঘাট থেকে দূরপাল্লার বাসে। বাবুঘাট থেকে যে তারা বিহারের বাসে করে গয়ায় পৌঁছেছিল, তার প্রমাণ হিসাবে বাসের টিকিটের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। আবার দিল্লি থেকে হাওড়ার ট্রেনের টিকিটও মিলেছে তাদের কাছে।
প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জেনেছেন, কলকাতায় তারা ডেরা বেঁধেছিল। কলকাতা ও তার আশপাশের জেলায় ঘুরে বেড়িয়ে এলাকার যুবকদের পর্যবেক্ষণ করত। যুবকদের মধ্যে কয়েকজনকে বেছে নিয়ে তাদের মগজধোলাই করতে শুরু করেছিল এই দুই জঙ্গি। তার জন্য কয়েকটি জায়গায় আইএস বাংলাদেশ জঙ্গি সংগঠনের পোস্টার ও লিফলেটও ওই যুবকদের হাতে তুলে দিত তারা। ওই ধরনের পোস্টার ও লিফলেট উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। যেভাবে একই সঙ্গে আইএস বাংলাদেশ ও জেএমবি-র মতো দু’টি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে দুই জঙ্গি যোগাযোগ রেখে চলত, তা হতবাক করেছে গোয়েন্দাদের। এসটিএফ-এর সূত্র জানিয়েছে, কলকাতায় কোথায় এই দুই জঙ্গি ডেরা বেঁধেছিল, কাদের মগজধোলাই করার চেষ্টা করছিল, সেই তথ্য বিস্তারিতভাবে জানা প্রয়োজন। তাই দুই জঙ্গিকে জেরা করতেই পাটনায় রওনা হচ্ছে এসটিএফ-এর একটি টিম। তাদের কাছ থেকে জাল পরিচয়পত্রও উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি তারা কোথা থেকে জোগাড় করেছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। এর আগেও কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয় আইএস জঙ্গি মুসা। এবার আইএস বাংলাদেশের জঙ্গিরা কলকাতায় স্লিপার সেল তৈরি করেছিল কি না, সেই বিষয়ে তথ্য পেতেও এই জঙ্গিদের জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[চূড়ান্ত সাফল্য ভারতের, মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গির তকমা রাষ্ট্রসংঘের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.