Advertisement
Advertisement

Breaking News

Congress

অধীর জমানায় ইতি, শুভঙ্করের আমলে বাম-কংগ্রেস জোট বজায় থাকবে?  

হাওড়ায় মিছিল করে অধীর বললেন, ‘কোনও আক্ষেপ নেই’।

Is Left-Congress alliance continue during New State President Shubhankar Sarkar
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:September 22, 2024 8:23 pm
  • Updated:September 22, 2024 11:36 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শুভঙ্কর সরকার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছেন শনিবার। রবিবার দুপুরে প্রথম সাংবাদিক বৈঠক। যেখানে শুরুতেই তাঁর কাছে প্রশ্ন উড়ে এল বাম-কংগ্রেস জোট ভবিষ‌্যৎ নিয়ে। প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরী যেখানে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে ২৬-এও বাম-কংগ্রেসের জোটের, সেখানে নতুন সভাপতি কোন পথে চলবেন? যার জবাবে কৌশলী শুভঙ্করের জবাব, জোটে ভরসা করে এগোতে চান না তিনি। দেশের নিরিখে বিজেপি আর বঙ্গে কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কারণ প্রতি মুহূর্তে দলের কর্মীদের এই দুই দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। সেখানে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করাই তাঁর প্রধান কাজ। তার পর ভবিষ‌্যৎ ঠিক করতে জনমত নেবে প্রদেশ কংগ্রেস।

এদিন শুভঙ্কর বলেন, “আমরা সমভাবে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রে আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে আর রাজ্যে তৃণমূলের।” সঙ্গে তাঁর স্পষ্ট বক্তব‌্য, “আমরা মানুষের কথা বলব। মানুষ যেটা চাইবে সেটাতেই আমরা যুক্ত হব। তবে একজনও কংগ্রেস কর্মীর গায়ে হাত পড়লে সেটা মেনে নেওয়া হবে না। কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যেতে তখন আমরা পিছপা হব না।”

Advertisement

দলকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়ার রেমেডি কী, সে কথা বলতে গিয়ে সকলকে নিয়ে চলার কথা বলেন শুভঙ্কর। তাঁর কথায়, “আমি সভাপতি। তবে আমাদের সবাইকে মিলে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। আপনি যখন দুর্বল হবেন, তখন আপনার ওষুধের প্রয়োজন হবে। যদি আপনার নিজের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে, তখন আর আপনার ওষুধের প্রয়োজন হবে না।” এই প্রসঙ্গে অধীরের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীও এই কথাই বলতেন। এর আগে যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা অধীর চৌধুরীর একার ছিল না। আমি বা আমার মতো অনেকেই তাঁর সিদ্ধান্তের শরিক ছিলাম।” শুভঙ্কর বলেন, “আমাদের একটাই লক্ষ্য, ‘মিশন ছাব্বিশ’। ছাব্বিশ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠন মজবুত করাই আমাদের টার্গেট।”

ইন্ডিয়া জোট এবং রাজ্যে তার কাউন্টার-পার্ট হিসাবে সমীকরণ নিয়ে প্রশ্নের জবাব এদিন বারবার দিতে হয় শুভঙ্করকে। তিনি বলেন, বিজেপির বিচারধারা, আরএসএসের বিচারধারার বিরুদ্ধে সারা ভারত জুড়ে বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন দর্শনের রাজনৈতিক দল নিয়ে ইন্ডিয়া মঞ্চ তৈরি হয়েছে। সেই মঞ্চের শরিক আমাদের রাজ্যের আরও দুই রাজনৈতিক দল। লোকসভা নির্বাচনে একটি দলের সঙ্গে আমাদের আসন সমঝোতা হয়েছিল। আরও একটি দলের সঙ্গে হয়নি। এখানে রাজনৈতিক সমীকরণ আলাদা বিষয়, আর রাজনৈতিক দল পরিচালনা করা একটি আলাদা বিষয়। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসকে আরও শক্তিশালী করা আমার প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য।”

শুভঙ্কর যখন বিধান ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি, তখন হাওড়ায় আর জি কর ইসুতে বিচারের দাবিতে মিছিলে যোগ দিয়েছেন সদ‌্য প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরী। নতুন সভাপতিকে ইতিমধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। প্রদেশ সভাপতি পদে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে অধীরের বক্তব‌্য, “যে কেউ সভাপতি হতে পারেন। আমার আগেও কেউ সভাপতি ছিলেন, এর পরেও কেউ হবেন। কেউ সভাপতি হয়, কাউকে পদ ছাড়তে হয়। এতে কিছু যায় আসে না। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের অধিকার বলে যাকে খুশি সভাপতি করতেই পারে। এতে আমার কোনও আপত্তি নেই।” একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, এই প্রক্রিয়া বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। সেক্ষেত্রে একাধিকবার প্রদেশের বহু নেতার মত নিয়েছে এআইসিসি। সেক্ষেত্রে সভাপতি পদ খোয়ালেও তাঁর আক্ষেপ নেই বলে জানান অধীর। বলেন, “আমি তো ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির সদস্যও রয়েছি।”

এদিকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আর জি করের নির্যাতিতা এবং বন্যা কবলিত মানুষের কথা ভেবে বিধান ভবনে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন শুভঙ্কর। সঙ্গে বলেন, “কলকাতাকে ধন্যবাদ অপরাধের বিরুদ্ধে এভাবে প্রতিবাদ করার জন্য। রাহুল গান্ধী বলেছেন ‘ডরো মত’। ভয় ছেড়ে রাজ‌্যবাসী প্রতিবাদ করুন। শিক্ষা, স্বাস্থ্যে দুর্নীতি থেকে শুরু করে মহিলাদের উপরে ক্রমাগত অত্যাচার হচ্ছে। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়গুলি আবারও বলব। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটাই আবেদন, বাংলার মহিলাদের নিরাপত্তা, তাঁদের সম্মানকে গুরুত্ব দিয়ে দেখুন।” জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে স্যালুট জানিয়েছেন তিনি। বিধান ভবনে এদিন শুভঙ্করকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন সিনিয়র নেতা-কর্মীদের অনেকেই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement