Advertisement
Advertisement

বালির সরকারি বাসে কি আদৌ চলেছিল গুলি? সিসিটিভি ফুটেজ না মেলায় ধন্দে পুলিশ

গুলতি দিয়ে পাথর ছোড়া হয়েছিল বলে ধারনা পুলিশের।

Is firing taken place in Bali's government bus, police still in doubt | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 18, 2021 10:45 am
  • Updated:April 18, 2021 10:45 am  

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: বালির চলন্ত বাসে গুলি না গুলতি দিয়ে ছোড়া হয়েছিল পাথর! ঠিক কী হয়েছিল তা এখনও পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছে। তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ না পেয়ে ঘটনার চার দিন পরও অন্ধকারে পুলিশ। বালিতে চলন্ত বাস লক্ষ্য করে ভারী কিছু ছোড়ার ঘটনা নিয়ে এমনই তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাসে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলেও তার কোনও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ফলে তদন্তের গতি অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক শনিবার বলেন, “ওই বাসটির কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা ওইদিনের কোনও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।”

পুলিশ সূত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজ পেলেই বোঝা যেত সেদিন প্রকৃত অর্থে কী ঘটেছিল? ওইসময়ের ভিডিও দেখতে পারলে ঘটনার তদন্ত অনেক সহজ হত। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ১৩ এপ্রিল ওই চলন্ত বাসটিতে গুলি নয়, গুলতিই মারা হয়েছিল। পরীক্ষার পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা পলিশকে জানিয়েছিলেন, চলন্ত বাসে গুলিচালনার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এমনকী কাচে গুলির কোনও পাউডারও পাওয়া যায়নি। ওখানে কোনও গুলির খোলও পড়ে থাকতে দেখা যায়নি। তাই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গুলি নয়, গুলতির মাধ্যমে পাথর জাতীয় ভারী কিছু ছোড়া হয়েছে। আর তাতেই বাসের কাচ ফেটে গিয়েছে। কিন্তু গুলি করার তত্ত্বও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। আর সে কারণেই তারা খোঁজ করে সিসিটিভি ফুটেজের। পাশাপাশি কে বা কারা এভাবে ভারী বস্তু বাসে ছুড়ল তাই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। কেনই বা বাস লক্ষ্য করে গুলতি মারা হল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘খেলা হবে স্লোগান তুলে এখন পালাতে চাইছে’, ভোটের দফা কমানো নিয়ে তৃণমূলকে তোপ দিলীপের]

স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। একদিকে বাসের সিসি ক্যামেরায় ফুটেজ না পাওয়া, অন্যদিকে রাস্তাতেও সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়ায় ঘটনা সম্পর্কে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। প্রসঙ্গত, খুন বা নানাধরনের অপরাধমূলক কাজের তদন্তে নেমে বর্তমানে পুলিশ অনেকক্ষেত্রেই সিসিটিভি ফুটেজের উপর নির্ভর করে। বিশেষত রাস্তাঘাটে ঘটে যাওয়া এই ধরনের রহস্যজনক ঘটনার উদঘাটন সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমেই হয়। তাই পুলিশের তরফে জাতীয় সড়ক কিংবা শহরের ছোট রাস্তায় অলিগলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। হাওড়া সিটি পুলিশও শহরের বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে। ইদানীং সরকারি বাসেও এই ধরনের ক্যামেরা রাখা হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনও সিসিটিভি ফুটেজই পায়নি পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে নিশ্চিন্দার রাজচন্দ্রপুর থেকে ডব্লুবি ০৫৭৬১০ সরকারি বৈদ্যুতিক বাসটি সল্টলেকের করুণাময়ীর দিকে যাত্রা শুরু করেছিল। বালি হল্ট থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাওয়ার সময় বালিঘাটের কাছে একটি স্লোপে বাসটি পৌঁছতেই বাসটি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিকট শব্দ হতেই যাত্রীবোঝাই বাসটি ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায়। যাত্রীরা দেখতে পান বাসের সামনের দিকের মেঝেতে ও দুই পাশের সিটে বসা যাত্রীদের গায়ে পড়ে রয়েছে জানলার ভাঙা ফাইবার কাচের টুকরো। আর দু’দিকের জানলাতেই তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। বাসটিকে দেখলেই বোঝা যাবে দু’টি জানলার কাচ এফোঁড়-ওফোঁড় করে ভারী কিছু একটা বেরিয়ে গিয়েছে। বাসের কাচ এভাবে গর্ত হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই বাসের যাত্রীরা বলতে থাকেন, বাসে গুলি চলেছে। তাঁরা অভিযোগ করতে থাকেন, কে বা কারা বাসে গুলি চালিয়ে চম্পট দিয়েছে। কিন্তু কে এই কাজ করল কেউ বুঝে উঠতে পারেননি।

[আরও পড়ুন: রাতের শহরে চালকবিহীন ‘ভূতুড়ে’ রোড রোলার, চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত ১]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement