সুব্রত বিশ্বাস: রাজধানী এক্সপ্রেসে দুষ্কৃতী তাণ্ডব নয়, যাত্রীদের মারে মরণাপন্ন আইআরসিটিসি কর্মী। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের পাশাপাশি ওই কর্মীর শরীরের ডানদিকটি পড়ে যাওয়ায় তাঁকে প্রথমে গয়া রেল হাসপাতাল, পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার ভর্তি করা হয়েছে। আইআরসিটিসির পূর্বাঞ্চলের গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চন্দ্রের আক্ষেপ, রাজধানীর মতো ট্রেনে একজন কর্মীকে দুই যাত্রী মেরে গুরুতর জখম করার পরও কোনও যাত্রী বাধা না দেওয়ায় ট্রেনে মানুষের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। যদিও দুই যাত্রীকে চিহ্নিত করে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে রেল পুলিশ। রেল পুলিশে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
[ বধূ কি ‘ভার্জিন’? সামাজিক অগ্নিপরীক্ষা বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদে যুবকরা ]
জানা গিয়েছে, সোমবার শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি রাজধানীতে আইআরসিটিসির বেয়ারা সুশান্ত কুমার বেহেরা ৩ থেকে ৯ নম্বর কোচে খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। রাত ন’টা নাগাদ তিনি আইসক্রিমের ক্রেট মাথায় করে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনের ঝাঁকুনিতে ক্রেটের ধাক্কা লাগে যাত্রী মহম্মদ কুরেশির গায়ে। এতেই অগ্নিশর্মা কুরেশি ও তার সঙ্গী মহম্মদ জাইদ। বি-১৩ কোচের ১৫ ও ১৬ বার্থের ওই দুই যাত্রী সুশান্ত বেহেরাকে কিল, চড়, ঘুষি মারতে মারতে বাথরুমের কাছে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। যাত্রীরা এই দৃশ্য দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করেননি। গুরুতর জখম অবস্থায় সুশান্তকে সহকর্মীরা পড়ে থাকতে দেখেন। সুশান্তর ওই পরিস্থিতির কারণও যাত্রীরা তাঁদের জানাননি। এমনকী ওই দুই যাত্রীকেও চিহ্নিত করেননি। ওই রাজধানীতে যাচ্ছিলেন এক চিকিৎসক। তিনিই প্রাথমিক পরীক্ষার পর সুশান্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান। এর পরেই তাঁকে গয়াতে নামিয়ে রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা দেখেন অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর শরীরের ডান দিকটি পড়ে গিয়েছে।
[ বিয়েতে খাপ পঞ্চায়েতের দৌরাত্ম্য পুরোপুরি বেআইনি: সুপ্রিম কোর্ট ]
অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবারই তাঁকে মুম্বই মেলে কলকাতায় আনা হয়। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। আইআরসিটিসির স্থায়ী কর্মী সুশান্ত কলকাতায় কর্মরত হলেও বাড়ি কটকে। বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। আইআরসিটিসির কর্মীদের কথায়, এলএইচবি কোচের ঝাঁকুনি একটু বেশিই হয়। তাই ঝাঁকুনিতে সুশান্তর সঙ্গে থাকা আইসক্রিমের ক্রেট একটু বেশি নড়ে যাওয়ায় ধাক্কা লাগে। দেবাশিসবাবুর কথায়, মঙ্গলবার শিয়ালদহ-রাজধানী মোটামুটি যথাসময়ে যাত্রা করছিল। ফলে যাত্রীক্ষোভ না থাকাটাই উচিত ছিল। কিন্তু এভাবে একজনকে মারধর করা মোটেই সমীচীন নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.