পুরনো খবরের কাগজ-আলপিন-খেলনায় সাজছে খিদিরপুরে দেবালয়। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
অভিরূপ দাস: ভাঙা মগ, পুরনো খবরের কাগজ, কি বোর্ডের কি, পুরনো বোতল।
কাগজওয়ালার কাছে যা চোখবুজে বিক্রি করে দেন আমজনতা। তাই দিয়েই সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ। স্লোগান, “এসো এবার নতুন করে দেখি।” আশি বছরে পড়ল খিদিরপুর ২৫ পল্লির পুজো। এবার তাদের থিম (Kolkata Durga Puja 2024 Theme) ‘পরিচারণ।’ থিম ভাবনায় শিল্পী বিমল সামন্ত। পরম যত্নে নিয়ে এসেছেন, পুরনো খবরের কাগজ, মাউস, ঠোঙা, ফেলে দেওয়া সিপিইউ-এর যন্ত্রাংশ। সেসব দিয়েই শিল্পী তৈরি করছেন এক বিস্ময়কর মণ্ডপ। ক্লাবকর্তারা বলছেন, “না দেখলে বিশ্বাস হবে না ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়েও এমন একটা কিছু তৈরি হতে পারে।”
কেন এমন ভাবনা?
থিমশিল্পী বিমল সামন্তর কথায়, “চারিদিকে শুধু চাওয়ার নেশা। সে নেশাই ছুটিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষকে। প্রচুর টাকা-ধনসম্পদ। কিন্তু কেন যে এত চাহিদা তা তলিয়ে ভাবছেন না কেউ। এদিকে চাওয়ার দৌড়ের ফাঁদে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। সম্পর্ক।” থিমশিল্পীর বক্তব্য, “সামান্য পাওয়াতেও অনেক ভালো থাকা যায় যদি সম্পর্ক অটুট থাকে। ফেলে দেওয়া এই পুরনো বাতিল জিনিসগুলোর মধ্যে লেগে সম্পর্কের ছোঁয়া। সে কারণেই মণ্ডপের উপাদান এবার বাতিল জিনিসপত্র।” বার্তা একটাই, পুরনো হয়ে যাওয়া সম্পর্কে যত্ন নিন।
থিমের নাম, পরিচারণ। ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য সৌম্যদেব প্রামাণিকের বক্তব্য, “চারিদিকের যা ফেলে দেওয়া, অবাঞ্ছিত, বাতিল জিনিস, সেগুলোকে নতুন করে পাওয়া যাবে মণ্ডপে।” শুধু থিম নয়, সাযুজ্য রেখে প্রতিমাও তৈরি করছেন বিমল সামন্ত।
পুজোর আর বেশিদিন বাকি নেই। তারমধ্যে গুচ্ছের আলপিন, ফেলে দেওয়া খেলনা, বোতল, পুরনো কাগজ, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ, টিনের টুকরো সাজানোর কাজ চলছে খিদিরপুর ২৫ পল্লিতে। ক্লাব কর্তারা বলছেন, শ্যাম্পুর বোতল, পুরনো কৌটো, ভাঙা চামচ-বাটি-কে তো রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখেছেন। কিন্তু এই উপাদান মণ্ডপ তৈরির কাঁচামাল হতে পারে তা দেখলে বিশ্বাস হবে না। আপাতত ঠিক হয়েছে দ্বিতীয়ার দিন উদ্বোধন হবে খিদিরপুর ২৫ পল্লির। এ মণ্ডপে অবহেলিত জিনিসপত্রের আনাচে কানাচে খেলা করবে পিনাকী গুহর আলো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.