দীপঙ্কর মণ্ডল: অনশনের একুশতম দিনে গণ কনভেনশন করলেন এসএসসির চাকরি প্রার্থীরা। বুধবার রাজ্যের শাসক বিরোধী শিল্পী-সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বিরোধী কয়েকজন রাজনীতিকও এসেছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন দুই অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ অবস্থায় রায়গঞ্জের অর্পিতা দাস এবং বীরভূমের সুবোধ হালদারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
[‘নীরব মোদি একটা গট আপ গেম’, নাম না করে মোদিকে আক্রমণ মমতার ]
নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে এসএসসির লিখিত পরীক্ষায় পাস করে ওয়েটিং লিস্টে থাকা কয়েকশো প্রার্থী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন করছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ৬০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রসঙ্গত, কয়েকজন অন্তঃসত্ত্বা প্রার্থীও অনশন করছিলেন। তাঁদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। অনশনের জেরে কয়েকদিন আগে এক মহিলার গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যায়। সন্তান কোলে মায়েরাও অনশন করছেন। তাঁদের অভিযোগ, এসএসসিতে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হচ্ছে।
[নোটিসের ড্রাফটিং ঠিক নেই, কমিশনের শোকজ প্রসঙ্গে পালটা বাবুলের]
এদিন গণকনভেনশনে আসা বিশিষ্টরাও একই বক্তব্য পেশ করেন। এপিডিআর, গণনাট্য সংঘের মতো সংগঠনগুলি অনশনকারীদের দাবি ন্যায্য বলে দাবি করে। কবি মন্দাক্রান্তা সেন, পরিচালক অনীক দত্ত, অভিনেতা বাদশা মৈত্র সরকারের প্রবল সমালোচনা করেন। সিপিএমের শ্যামল চক্রবর্তী এবং ফুয়াদ হালিমের মতো নেতারাও আন্দোলনে সহমর্মিতা জানান। শিক্ষকপদে চাকরিপ্রার্থীদের অনশনে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। চলতি মাসের শুরুতে বর্ধমানে বিজেপির কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজ্যে এসেছিলেন প্রকাশ। রাজ্য বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। পরে ওই দলটি কলকাতা বিমানবন্দরে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে অভিযোগ করা হয়, উচ্চপ্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি চলছে। তার প্রতিবাদেই অনশন। অনশনকারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী।
[দোলে জাল মদ রুখতে তৎপর প্রশাসন, গোয়েন্দা নজরে শহরের দশটি পয়েন্ট]
বিভিন্ন জেলা থেকে এদিন প্রচুর চাকরি প্রার্থী অনশন মঞ্চে আসেন। এক উচ্চপ্রাথমিক প্রার্থী বলেন, “তিন বছর আগে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। বাংলার শিক্ষক হিসাবে আবেদন করে টেট পাস করেছি। আমার তুলনায় কম মেধাবীরা চাকরি পেলেও কাউন্সেলিংয়ে ডাক আসেনি। কেউ জানতেই পারছে না কীসের উপর ভিত্তি করে নিয়োগ হচ্ছে।” বস্তুত, নিয়োগের তালিকায় কোনও প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর উল্লেখ করছে না এসএসসি। এখানেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে অনশনে বসা এক প্রার্থী বলেন, “আমার নাম ওয়েটিং লিস্টে আছে। শূন্য শিক্ষক পদ আছে। স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া হলে আমার অবশ্যই চাকরি হওয়া উচিত। কিন্তু তা হবে কি না জানি না।” বিশিষ্টদের দাবি, খোলা আকাশের নিচে অনশনমঞ্চের কাছে পানীয় জল, অ্যাম্বুল্যান্স এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখা উচিত সরকারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.