দীপঙ্কর মণ্ডল: শান্তিনিকেতনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) জমি ঘিরে বিতর্ক। বুদ্ধিজীবীদের প্রতিবাদ করতে আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। রবিবার বিকেলে কলকাতার বাংলা অ্যাকাডেমির সামনে জড়ো হন বুদ্ধিজীবীরা। তাঁদের হাতে পোস্টারে লেখা, ‘নোবেল দেখলেই বিজেপি যায় চটে’, ‘চাড্ডি চায় বাঙালির হাড্ডি’, ‘বিজেপির বাঙালি অপমান মানছি না’। অন্যদিকে, এই জমি বিতর্ক ইস্যুতে এদিন মুখ খুলেছেন বাম ও বিজেপি নেতারা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। শনিবারই শহরের বুদ্ধিজীবী মহল স্থির করেছিলেন, রবিবার তাঁরা বিষয়টির প্রতিবাদে পথে নামবেন, সভা করবেন। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে যেভাবে রাজনৈতিক দিক থেকে আক্রমণ করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিবাদের সুর ছড়িয়ে দেবেন আশেপাশে। সেইমতো বিকেলে বাংলা অ্যাকাডেমি চত্বরের প্রতিবাদ সভায় হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অধ্যাপক ব্রাত্য বসু, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন, শিল্পী তথা প্রাক্তন সাংসদ যোগেন চৌধুরী, কবি জয় গোস্বামী, সংগীত শিল্পী তথা প্রাক্তন সাংসদ কবীর সুমন, সংগীতশিল্পী সৌমিত্র রায়, সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়রা। তাঁদের দেখে এগিয়ে আসেন পথচলতি সাধারণ মানুষও। কলেজ ছাত্রীরাও হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়।
বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সকলেই প্রায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। প্রতিবাদ সভার অন্যতম উদ্যোক্তা রাজ্যের মন্ত্রী তথা নাট্যব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু বলেন, “অমর্ত্য সেন শুধু বাংলার নয়, সারা পৃথিবীর কাছে শ্রদ্ধেয়। বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলায় অমর্ত্য সেনকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে যে কী হাল হবে, তা বোঝানোর জন্য আজ আমরা এই সভা করছি।” চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরীর কথায়, “আগে ওরা ক্ষমা চাক। তারপর কথা বলব।” কবি জয় গোস্বামীর মত, “রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে রাজনীতি করার ফল ওরা ভুগবে। অমর্ত্য সেনকে অপমান করার মতো সাহস কোথায় পেল!” সংগীতশিল্পী কবীর সুমন বিজেপি বিরোধী সুর আরও চড়িয়ে বললেন, “যারা গৌরী লঙ্কেশকে খুন করল, তারা অমর্ত্য সেনকে নিয়ে কথা বলছে! এরা বাংলার সংস্কৃতি জানে না। বাঙালির আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।”
এদিকে, এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বামপন্থীরাও। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর কথায়, “অমর্ত্য সেনের বাড়ি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আর তা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। কোথায় রাজ্য সরকার সমস্যা সমাধান করবে, তা না করে তরজায় জড়িয়েছে। এই সংস্কৃতি রাজ্যে ছিল না। মানুষ এটা ভালভাবে নিচ্ছে না।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “যখন হারের মতো পরিস্থিতি হয়, তৃণমূল তখনই বুদ্ধিজীবীদের আশ্রয় নেয়। আমি বুদ্ধিজীবীদের বলব আপনারা সমাজের সঙ্গে থাকুন। একটা ভ্রষ্ট সরকারের পাশে থাকবেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.