সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পশ্চিমবঙ্গ স্পর্শকাতর রাজ্য’- আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি দল থেকে এমন দাবিই তোলা হয়েছে। তাদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে অতিরিক্ত মাত্রায় স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করা উচিত। শুধু তাই নয়, এই রাজ্যে নাকি কখনওই ন্যায়সঙ্গত ভোটদান হয় না, অন্তত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে তো নয়ই- এমনটাই দাবি তোলা হয়েছে বিজেপি দলের পক্ষ থেকে।
লোকসভা ভোটের আগে এটা যে নিঃসন্দেহে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এমন মন্তব্য করা হয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত রাজ্যের রাজনৈতিক মহল-সহ টলিপাড়ারও একাংশ। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির এহেন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে এহেন মন্তব্যের তীব্র নিন্দাও করেন তিনি।
সম্প্রতি, এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেছেন বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ। সূত্রের খবর অনুয়াযী, এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট পরিচালক অরিন্দম শীল, কবি সুবোধ সরকার, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন, অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার-সহ আরও অনেকে। “এই রাজ্যকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করার কোনও প্রয়োজন নেই, কেন না তা অর্থহীন!”- এমনটাই দাবি তুলেছেন এদিন উপস্থিত বুদ্ধিজীবী মণ্ডলী।
এপ্রসঙ্গে কবি সুবোধ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বুথকে স্পর্শকাতর বলার অর্থ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মানুষকে অপমান করা। সুতরাং, আমার মনে হয় পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নাগরিকের প্রতি এটা অপমানজনক। এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সেজন্য অতি সুচারুভাবে, বিনীতভাবে আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছি নির্বাচন কমিশনের কাছে। বিশেষ করে অন্যান্য রাজ্যের মানুষ যারা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকেন, তাঁদের কাছে এটা একটা অন্যরকম বার্তা বহন করছে– পশ্চিমবঙ্গ পুরোটাই যেন একটা উপদ্রুত অঞ্চল, যেন কাশ্মীরের থেকেও ভয়ংকর। বাইরের রাজ্যের কাছে বাংলার এহেন ভাবমূর্তি যে তুলে ধরা হল, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে।”
[ব্যালটেই শুধু নয়, এপ্রিলে কং-বিজেপি লড়াই বক্স অফিসেও]
পরিচালক অরিন্দম শীল জানিয়েছেন, “আমরা এই রাজ্যে বহুদিন বাস করছি। ভোটদান এরাজ্যে বরাবরই শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে আসছে। ভোটদান নিয়ে অনেকদিন ধরেই অনেক কিছু দেখেছি, এব্যাপারে নিজস্ব বক্তব্য রয়েছে আমাদের। রয়েছে নিজস্ব পর্যবেক্ষণও। তার ভিত্তিতেই বলছি, রাতারাতি রাজ্যকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করার কোনও প্রয়োজন নেই! কোনও দলের তরফ থেকে নয়, বরং ব্যক্তিবিশেষেই আমরা আমাদের এই প্রতিবাদের কথা জানিয়েছি রাজ্যের নির্বাচন আধিকারিককে”। চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নর মতে, “আমরা কোনও পক্ষ থেকে আসিনি। আমরা কোনও রাজনৈতিরক কর্মী নই। আমরা মনে করি, রাজ্যের প্রতিটি বুথকে অতি স্পর্শকাতর বুথ বলে চিহ্নিত করে একটি ভয়ংকর অবস্থার জন্ম দেওয়া হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.