সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যাবতীয় জল্পনার অবসান। একুশের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস (Congress) জোটে শামিল হচ্ছে পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টও। মঙ্গলবার আলিমুদ্দিনে জোট বৈঠক শেষে একযোগে একথা ঘোষণা করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, আসন্ন নির্বাচনে আসন সমঝোতা করেই লড়বে বাম কংগ্রেস এবং আইএসএফ। তবে, আব্বাসের তরফে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে কেউ হাজির ছিলেন না। তাছাড়া, কোন অঙ্কে তিন শিবিরের আসন সমঝোতা হচ্ছে, সেটাও ঘোষণা করেনি জোট শিবির।
বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা চলছিল, বাম-কংগ্রেসের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ জোটে শামিল হতে পারে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। এর আগে জোটে যোগ দিতে চেয়ে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে নিজ উদ্যোগে চিঠিও লিখেছিলেন আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddique)। পরে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের তরফে চিঠি লেখা হয়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকেও। সব পক্ষের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এই জোটের অন্যতম কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আসন সমঝোতা। সূত্রের খবর, বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে আব্বাস যে সংখ্যক আসন দাবি করেছেন, জোট নেতৃত্ব সেই পরিমাণ আসন কোনওভাবেই ছাড়তে রাজি নন। জটিলতা ছিল আব্বাসের দল যে যে আসন দাবি করেছে, তা নিয়েও। সূত্রের দাবি, ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরের বেশ কিছু আসনে লড়তে চেয়েছে। এই আসনগুলি আবার কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত। কংগ্রেস এই আসনগুলি ছাড়তে রাজি নয়। এইসব জটিলতা কাটাতেই মঙ্গলবার সরস্বতী পুজোর দিন বৈঠকে বসে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। বৈঠকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Basu), প্রদেশ কংগ্রেস সভাপত অধীর চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাম ও কংগ্রেসের একাধিক নেতা। ভারচুয়ালি উপস্থিত ছিলেন আব্বাস সিদ্দিকির ভাই নওসাদ সিদ্দিকিও।
বৈঠক শেষে আসনরফা নিয়ে এই জটিলতা অব্যাহত রেখেই বিমান বসু, অধীর চৌধুরীরা ঘোষণা করে দিলেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়াই করবে বাম ও কংগ্রেস। অধীর দাবি করলেন, ইতিমধ্যেই বাম এবং কংগ্রেস নিজেদের মধ্যে আসন রফা সেরে ফেলেছে। তবে, তা এখন ঘোষণা করা হচ্ছে না। কারণ, এই আসন রফা নিয়ে আলোচনা চলাকালীন আইএসএফ, এনসিপি, আরজেডির মতো ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলি জোটের উপর আস্থা দেখিয়েছেন। তাই এই ছোট দলগুলি যাতে সম্মান পায়, তা নিশ্চিত করতেই আগেভাগে নিজেদের ভাগের আসনের সংখ্যা ঘোষণা করতে চাইছে না জোট নেতারা। অধীরের দাবি,”রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোটের উপর আস্থা বাড়ছে মানুষের। বাংলার লড়াইটা শুধু বিজেপি-তৃণমূলের লড়াই নয়। বাংলার লড়াইটা হতে চলেছে ত্রিমুখী। বাম-কংগ্রেস জোট কাউকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য লড়াই করছে না। নিজেরা ক্ষমতা দখলের জন্য লড়াই করছে।” রাজ্যে বাম-কংগ্রেসই ক্ষমতায় আসবে, ঘোষণা করেছেন প্রত্যয়ী অধীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.