সুব্রত বিশ্বাস: নির্বাচনের আগেই রাজ্যের প্রতিটি স্টেশন থেকে হকার উচ্ছেদ করতে চায় রেল। পূর্ব রেলের আরপিএফের আইজি এ কে মিশ্র বলেন, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হকার। রেল বোর্ডে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে এই হকার নিয়ে। তাই স্টেশন চত্বর ও ট্রেনে আর হকারি করতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠবে কেন্দ্র-রাজ্য রাজনীতি। সোমবার ভোররাতে আরপিএফ আইজি হাওড়া স্টেশনে ‘সারপ্রাইজ চেকিং’-এ গিয়ে স্টেশন চত্বরে হকার দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন। দুই ইন্সপেক্টরকে বদলিও করে দেন। এরপর মঙ্গলবার সকালেই হাওড়া স্টেশনের সামনে থেকে প্রায় পঞ্চাশজন হকারকে উচ্ছেদ করে রেল।
নির্বাচনের আগে এই কর্মকাণ্ড রীতিমতো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানান মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপে কর্মহীন হয়ে পড়বেন বহু মানুষ। এজন্য দলীয় নির্দেশ যা হবে সেই অনুযায়ী তাঁরা পদক্ষেপ করবেন বলে জানান তিনি। আইজি মিশ্র হাওড়া, শিয়ালদহই নয়, পূর্ব ও মেট্রো রেল দু’টির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ফলে সেই দুই রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি তাঁর দেখার কথা। স্বাচ্ছন্দ্য আনতে হকার উচ্ছেদ জরুরি। ফলে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে তাড়াতাড়ি।
রেলের নিরাপত্তা বিষয়ক বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী বিগত এক দশকে রেল স্টেশনগুলিতে হকার বেড়েছে সহস্র গুণ। ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে বেশ কয়েকগুণ। যাত্রী সংখ্যাও বেড়েছে লাফিয়ে-লাফিয়ে। তবে এজন্য প্লাটফর্ম বাড়েনি। তার মধ্যে এত হকার বসে যাওয়ায় যাতায়াত করাই দায় হয়ে পড়েছে। হচ্ছে দুর্ঘটনা। পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদের বিরোধী তৃণমূল। এর আগে বহুবার পুনর্বাসনের দাবি ও হকারদের প্রতি অত্যাচারের প্রতিবাদ তুলে ভূতপূর্ব রেলমন্ত্রীদের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। আরপিএফ, জিআরপি ও এক শ্রেণির দালালচক্রের মোটা অঙ্কের লেনদেনে হকার চলে এসেছে। আইজি মিশ্র বলেন, ‘‘সোমবারই হাওড়া থেকে দুই আরপিএফ ইন্সপেক্টরকে সরানো হয়েছে। এটা বিভাগীয় কর্মীদের কাছে একটি ‘ছোট মেসেজ’-সংশোধন কর নিজেকে৷ নতুবা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বিভাগীয়ভাবে।’’ হকার উচ্ছেদে এই সব কর্মীদের সাহায্য নেবে না রেল। পাছে ‘সরষের ভিতরেই ভূত থাকে’ এই ভেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.