সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীর্ষ আদালতের কড়া নির্দেশ- সব প্রেক্ষাগৃহে ছায়াছবি প্রদর্শনের আগে জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক! তার মানেই দর্শকদের আসন ছেড়ে ওই সময়টায় সোজা হয়ে উঠে দাঁড়ানোও নিয়মের মধ্যেই পড়ছে। কিন্তু, সম্প্রতি এই রায়ে মুশকিলে পড়েছেন পর্নোগ্রাফি দেখানো হয় যে সব প্রেক্ষাগৃহে, তাদের মালিকরা। তাঁরা নিয়ম মেনে জাতীয় সংগীত বাজাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু দর্শকদের কেউই প্রায় উঠে দাঁড়াচ্ছেন না! ফলে, এমতাবস্থায় আইন অমান্য হলে কী কর্তব্য, তাও স্থির করে উঠতে পারছেন না হল-মালিকরা। খোদ কলকাতাতেই দেখা যাচ্ছে এমন বিচিত্র সঙ্কট!
কলকাতায় অনেক যুগ ধরে নীল-ছবি দেখানোর জন্য বিখ্যাত যে প্রেক্ষাগৃহ, তার টিকিট-কাউন্টার কর্মী সুভাষ ঝা একটু স্পষ্ট করে দিলেন বিষয়টা। তাঁর সাফ বক্তব্য- “দেখুন, লোকে এখানে পর্নোগ্রাফি দেখতে আসছে। আনন্দ পেতে আসছে। ফলে, এইরকম একটা মানসিক অবস্থায় সোজা হয়ে উঠে দাঁড়ানোটা কতটা সম্ভব, সেটা ভেবে দেখার মতো বিষয়”, পুরুষদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার দিকে আলতো ইঙ্গিত ছুড়ে দিচ্ছেন তিনি। “তাছাড়া যাঁরা ইদানীং হলে এসে পর্নোগ্রাফি দেখেন, তাঁদের অধিকাংশই সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষ! তাঁরা এত সৌজন্যের ধার ধারবেন, এটা কি আশা করা উচিত?” একটু থেমে ফের প্রশ্নবাণ সুভাষ ঝার!
কিন্তু আইনও তার জায়গায় জেঁকে বসেছে কড়া হয়ে। ফলে দ্বিধায় পড়েছেন নীল-ছবির হল-মালিকরা। প্রেক্ষাগৃহে দর্শক উঠে না দাঁড়ালে তাঁরা কোনও সরকারি গেরোয় পড়বেন কি না, সেটাই উদ্বেগে রেখেছে তাঁদের। “আমাদের হলে কর্মচারীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। শোয়ের সময় সবাই ব্যস্ত থাকেন খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে। ফলে তাঁদের পক্ষে গিয়ে জাতীয় সংগীত চলাকালীন দর্শকদের উঠে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা সম্ভব নয়! তাছাড়া কোনও কারণে রেগে গিয়ে দর্শকরা যদি অনুরোধকারীকে মারধর করেন, তবে তার দায়িত্ব কে নেবে?” জানতে চাইছেন সোসাইটি সিনেমা হলের মালিক এস এ ফিরোজি।
ফলে, সমস্যা মিটছে না। শীর্ষ আদালত যা-ই বলুক না কেন, তার রায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জাতীয় সংগীত চলার সময়েও দিব্যি আসনে গ্যাঁট হয়ে বসে থাকছেন দর্শকরা। অপেক্ষা করছেন সাগ্রহে- কখন রুপোলি পর্দায় শুরু হবে শরীরী খেলা! সেই খেলার আঁচে চোখ আর শরীর সেঁকে তাঁরা যখন হল থেকে বেরোচ্ছেন, মাথায় থাকছে শুধু তৃপ্তির হিসেবটুকুই! সেখানে জাতীয় সংগীত কী ও কেন- এই প্রশ্ন অবান্তর!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.