ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: কেএমডিএ এলাকায় ভূগর্ভস্থ নিকাশি পরিষ্কার করতে কলকাতা পুরসভার পথে হাঁটবে অন্যান্য পুরসভা। কোনও রাস্তার ভূগর্ভস্থ নিকাশির পাঁক-ময়লা পরিষ্কার করার আগে ওই রাস্তার অন্তত ছ’টি ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে দেখা হবে আরশোলা আছে কি না? যদি আরশোলা থাকে, তবে প্রাণঘাতী মিথেন গ্যাস কম। একই সঙ্গে দেশলাই জ্বালিয়ে দেখা হবে নিভে যাচ্ছে কি না? যদি আরশোলা থাকে অথবা দেশলাই জ্বলে তবে ভরসা। তবে বুঝতে হবে ভূগর্ভস্থ নিকাশিতে কোনও দূষিত গ্যাস নেই!
কেএমডিএ সূত্রে খবর, কলকাতা পুরসভার অতি পুরাতন এই পদ্ধতিকে ‘ম্যানুয়াল অফ হ্যান্ডবুক’ হিসাবে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। কেএমডিএ-র নিকাশি বিভাগের এক শীর্ষ ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, সব পুরসভাকে এই মূল নিয়মগুলো মানতে বলা হয়েছে। তাহলে আর ট্যাংরার নিকাশি সংস্কারের মতো মারাত্মক ঘটনা অনেকটা এড়ানো সম্ভব হবে।
কলকাতা পুর এলাকায় দেখা গিয়েছে, প্রতিটি নিকাশি থেকে কাদা অথবা ময়লা তোলার আগে পরপর ৬টি ম্যানহোল খুলে দেওয়া হয়। এবার ম্যানহোলের লোহার পাত উলটে দেখা হয়, আরশোলা রয়েছে কি না? যদি আরশোলা থাকে তবে খানিকটা আশ্বস্ত। কারণ, অক্সিজেন আছে ওই ম্যানহোলের ভিতরে। এবার বড় মাপের ব্লোয়ার চালিয়ে ভিতরের গ্যাস বের করা হয়। দ্বিতীয় ম্যানহোলের ভিতরে বাইরের হাওয়া পাঠানো হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কলকাতার নিকাশি পরিষ্কার করতে কোনও শ্রমিক নামেন না। সকশান কাম জেটিং মেশিন দিয়ে ময়লা তোলা হয়।
ট্যাংরা ট্যানারি এলাকায় বিষাক্ত গ্যাসে তিন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার কারণ পর্যালোচনা করছে কলকাতা পুরসভা। তারপরই পুরসভার পথেই কেএমডিএ এলাকার সব গভীর নিকাশি থেকে পাঁক-ময়লা পরিষ্কার হবে। পুরসভার নিকাশি বিভাগ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ম্যানুয়াল অফ হ্যান্ডবুক, কেএমডিএকে পাঠানো হয়েছে। দুই সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা সহমত হয়েছেন।
এক পুরকর্তার কথায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা নিকাশি, নালায় প্রাণঘাতী গ্যাস আছে কি না, বলে দেয় আরশোলা। ব্যাপারটা শুনতে খানিকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এই পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে মেনে চলছে কলকাতা পুরসভা।
এক পুরকর্তার কথায়, যে ম্যানহোল পরিষ্কার হবে তার আগে-পরে অন্তত ৬টি ম্যানহোল খুলে ফেলা হয়। প্রতিটি ম্যানহোল থেকে যদি আরশোলা বের হয় তাতে যেমন আশ্বস্ত বোধ করেন শ্রমিকরা, তেমনই ম্যানহোলের ভিতরে দেশলাই জ্বেলে দেখা হয় জ্বলছে কি না? যদি আগুন জ্বলে বুঝতে হবে বিষাক্ত গ্যাস রয়েছে। তখন ব্লোয়ার দিয়ে ভিতরের গ্যাস বের করা হয়। ফের আরেকদফা দেশলাই জ্বেলে পরীক্ষা হয়। এরপর সাকশন এবং জেট মেশিন দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করা হয়। কেএমডিএ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে পুরসভার ম্যানুয়াল সব পুরসভাকে পাঠানো হয়েছে। দরকারে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার পথেই সব ভূগর্ভস্থ নিকাশি পরিষ্কার করতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.